যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৪৮ ঘণ্টায় অস্ত্রোপচার ছাড়াই ১৭ শিশুর জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি মেয়ে ও ৮টি ছেলে। শিশু ও প্রসূতি মায়েরা সুস্থ আছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৭৩ প্রসূতির। এর মধ্যে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছে ১৭ প্রসূতির। হাসপাতালটিতে সেপ্টেম্বরের ২ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৪১ প্রসূতির।
আর বৃহস্পতিবার ও শনিবার সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৯ প্রসূতির। এর আগের মাসে হাসপাতালটিতে স্বাভাবিক ডেলিভারি হয় ১২৩ এবং সিজারিয়ান ডেলিভারি হয় ৮৮ প্রসূতির।
সিজারের নামে বাণিজ্য, দালালচক্র ও অদক্ষ ধাত্রীর হাত থেকে প্রসূতিদের রক্ষা এবং নিরাপদে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের লক্ষে চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন চিকিৎসক কাজ শুরু করে ২০১০ সাল থেকে। এ বিষয়ে প্রসূতিদের উদ্বুদ্ধকরণে তারা বিভিন্নভাবে প্রচারও চালান।
চিকিৎসা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রসব পূর্ববর্তী চিকিৎসার সময় স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রসূতি মায়েদের কাউন্সিলিং এবং হাসপাতালে চিকিৎসক ও সেবিকাদের সমন্বয়ে কাজের ফলেই হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসূতি বেড়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে কর্তব্যরত মিডওয়াইফ তামান্না আক্তার বলেন, ‘আমরা প্রসূতিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও তাদের প্রসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করার কারণেই হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসূতি বেড়েছে।’
হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আল এমরান বলেন, ‘আমাদের মিডওয়াইফরা হাসপাতালে কোনো প্রসূতি এলে তাদের শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলেন। তাদের স্বাভাবিক প্রসবের জন্য উৎসাহিত করেন। এজন্য হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসব বেড়েছে।’
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের পরিমাণ কিছুটা কমে যাচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক, সেবিকা, মিডওয়াইফ ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে মিটিং করে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আমাদের এএনসি কর্নারে (প্রসব পূর্ববর্তী সেবাকেন্দ্র) হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সব প্রসূতির মোবাইল নম্বর রাখা হয়। প্রসবের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগে তারা হাসপাতালে না এলে তাদের কল করে হাসপাতালে আনা হয়।’
প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবায় উপজেলা পর্যায়ে দেশ সেরা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রসূতি সেবায় উপজেলা পর্যায়ে দেশ সেরার স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছে ১৩ বার।