চিটাগং কিংসের কাছে ৩৭ লাখ ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬ কোটি টাকা) বেশি দাবি করে গত ২২ জুলাই বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে আইনি নোটিশ দিয়েছে বিসিবি। এরপর গত সোমবার সংবাদমাধ্যমের কাছে বিপিএলের চিটাগং কিংসের স্বত্বাধিকারী সামির কাদের চৌধুরী পাল্টা দাবি করেন, আইনি নোটিশ পাঠিয়ে বিসিবি তাঁর কাছে যে টাকা দাবি করেছে, তা ভিত্তিহীন।
চিটাগং কিংসের মালিকের এই বক্তব্যের পর গতকাল নিজেদের দাবির ব্যাখ্যা দিয়েছে বিসিবি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চিটাগং কিংসের মালিক প্রতিষ্ঠান এস কিউ স্পোর্টসের সঙ্গে দেনা–পাওনার হিসাব দিয়েছে তারা। সূত্র জানিয়েছে, বারবার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ভবিষ্যতে এস কিউ স্পোর্টসকে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি না দেওয়ারও নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি।
এর আগে বিপিএলের প্রথম দুই আসরের পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় চিটাগং কিংসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছিল বিসিবি। সর্বশেষ ১১তম বিপিএলের আগে তাদের বকেয়া সেই ১৭ কোটি টাকার প্রায় পুরোটাই মাফ করে দেয় বোর্ড। মাত্র সাড়ে ৩ কোটি টাকার মতো পরিশোধ করতে বলা হয় চিটাগং কিংসকে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সময়মতো সে টাকাও পরিশোধ করতে পারেনি বলেই তাদের ওপর আর আস্থা রাখছে না বিসিবি। উকিল নোটিশ পাঠানো সে কারণেই।
বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়েছে, বিপিএলের তিন আসর মিলিয়ে চিটাগং কিংস দলের মালিক প্রতিষ্ঠান এসকিউ স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ধারাবাহিকভাবে তাদের আইনগত ও আর্থিক দায়বদ্ধতা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তাঁরা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, ট্যাক্স, খেলোয়াড় ও দলের সদস্যদের পাওনা মেটায়নি।
পাওনা অর্থ আদায়ে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর চিটাগং কিংসের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করার কথা জানিয়েছে বিসিবি, সে চুক্তির আওতায়ই তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা পাওনা নির্ধারিত হয়। তবে সেই পাওনাও পরিশোধ না করায় বোর্ড গত ২২ জুলাই চুক্তি বাতিল করে চিটাগং কিংসকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়।

সঙ্গে সুদে–আসলে বকেয়া হালনাগাদ করে তাদের কাছে মোট ৩৭,৮২,১৫৬ মার্কিন ডলারের দাবিও জানায় বিসিবি। এতে যোগ হয়েছে বিপিএলের প্রথম ও দ্বিতীয় আসরের বকেয়া অর্থের সুদ। চিটাগং কিংসের কাছ থেকে পাওনা আদায়ের জন্য বিসিবি সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
এই বকেয়ার বাইরে এসকিউ স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড বিপিএলের সর্বশেষ আসরে খেলোয়াড়, কোচ, হোটেল ও সরবরাহকারীদেরও অনেক পাওনা পরিশোধ করেনি বলে দাবি বিসিবির। একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাইজমানি এবং রাজস্বের ভাগ সমন্বয় করার পরও এই পাওনার অঙ্কটা ৭০–৮০ লাখ টাকার মতো।
বিসিবির দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে আজ মুঠোফোনে সামির কাদের চৌধুরী বলেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ আমার সঙ্গে অ্যাগ্রিমেন্ট করেন, ওই অ্যাগ্রিমেন্টের কাগজ আমি আজ পর্যন্ত পাইনি। আমি সই করে বোর্ডে পাঠিয়ে দিয়েছি, কিন্তু আমাকে কখনো সই করে এটা দেওয়া হয়নি। আমার সঙ্গে আপনার যদি একটা চুক্তি হয়, দুই পক্ষের সই লাগবে না!’
বিসিবির সঙ্গে এস কিউ স্পোর্টসের আরবিট্রেশনের কথা উল্লেখ করে তাঁর পাল্টা দাবি, ‘এখন যে আমাকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে, এটাই বেআইনি। কোর্টে যদি কোনো বিষয় থাকে, আপনি কি লিগ্যাল নোটিশ দিতে পারেন?’