৪৫তম বিসিএস: পাঁচ বিসিএসের মধ্যে সবচেয়ে কম উত্তীর্ণ

0
127

সবচেয়ে কম সময়ে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। গত ১৯ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসাবে পরীক্ষা নেওয়ার ১৭ দিনের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার প্রিলিমিনারির ফলাফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১২ হাজার ৭৮৯ জন প্রার্থী। তবে গত পাঁচটি বিসিএসের মধ্যে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে সবচেয়ে কম প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন, যা ৫ শতাংশেরও কম।

৪০ থেকে ৪৫তম পর্যন্ত পাঁচটি বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের আগস্টে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষা দেন ৩ লাখ ২৭ হাজার পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ২৭৭ জন। এই বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ক্যাডার পদে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে নন-ক্যাডার পদে এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে আবেদন করেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার প্রার্থী। এই বিসিএসে ২১ হাজার ৫৬ জন প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করেন। ৪১তম বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়া এখনো চলমান।

সবচেয়ে কম সময়ে ৪৫তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২ হাজারের বেশি

৪৩তম বিসিএসে আবেদন জমা পড়েছিল ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০টি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ না হওয়ার কারণে তিন দফায় ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়িয়েছিল পিএসসি। ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাস করেন ১৫ হাজার ২২৯ পরীক্ষার্থী। এটির নিয়োগপ্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি।

৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ৭৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। এর মধ্যে গতকাল প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, পাস করেছেন ১২ হাজার ৭৮৯ জন। শতাংশের হিসাবে তা দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৭৭।

৪৪তম বিসিএসে মোট আবেদন করেছিলেন ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭১৬ জন। গত বছরের ২৭ মে ৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করেন ১৫ হাজার ৭০৮ পরীক্ষার্থী। ৪৪তম বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়াও চলমান।

৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জনকে। ক্যাডার পদের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করে এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ক্যাডার পদে যেমন পছন্দ নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়, তেমনই নন-ক্যাডার পদেও পছন্দের তালিকা নির্দিষ্ট করে দিতে পেরেছেন প্রার্থীরা।

গত ১৯ মে অনুষ্ঠিত ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ৭৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। এর মধ্যে গতকাল প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, পাস করেছেন ১২ হাজার ৭৮৯ জন। শতাংশের হিসাবে তা দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৭৭।

৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল জুলাইয়ে

হাসিবুর রহমান নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘পিএসসি কখনো কাট মার্কস প্রকাশ করে না। তাই যাঁরা পাস করেছেন, তাঁরা কত নম্বর পেয়ে পাস করেছেন, তা ঠিক বোঝা যায় না। প্রতিবার যেহেতু ২০ হাজারের কাছাকাছি প্রার্থী উত্তীর্ণ হন, তাই এবারও আশা করেছিলাম ২০ হাজার প্রার্থী টিকবে। কিন্তু মাত্র ১২ হাজার অনেক কম। আর যাঁরা এবার টিকেছেন, তাঁদের অধিকাংশই আগের বিসিএসগুলোর প্রার্থী, যাঁদের লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। নতুনরা এবার কম উত্তীর্ণ হয়েছেন।’

পিএসসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেশি প্রার্থী টিকালে বিসিএস দীর্ঘায়িত হয়। একটি বিসিএস শেষ করতে অনেক সময় লাগে। এ ছাড়া নন-ক্যাডারে যাঁরা উত্তীর্ণ হন, তাঁদের সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব হয় না। এতে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে হতাশা বাড়ে। এসব দিক চিন্তা করে কম প্রার্থী টেকানোর বিষয়টি নিয়ে ভাবছে পিএসসি।

৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি জানুয়ারিতে, বয়সে ছাড় পাবেন প্রার্থীরা

৪৫তম বিসিএসে কম প্রার্থী পাস করানোর সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নন বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তবে সামনের বিসিএসগুলোয় কম প্রার্থী টেকানোর বিষয়টি পিএসসির বিশেষ সভায় অনুমোদন পেতে পারে বলে জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.