৩৪ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের

0
23
ট্রফি হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উল্লাস, এএফপি

৩৪ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ত্রিনিদাদে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে ২০২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে শাই হোপের দল।

সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে, তখন বর্তমান দলে খেলা কোনো ক্রিকেটারের জন্মও হয়নি। তখন পাকিস্তান ওয়ানডে বিশ্বকাপও জেতেনি, ইমরান খান পাকিস্তানের অধিনায়ক। সেই ১৯৯১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০–তে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজের আগে খেলা সর্বশেষ ১০টি ওয়ানডে সিরিজেই জিতেছিল পাকিস্তান। টানা ১১ সিরিজে দলটি ছিল অপরাজিত। সব সংস্করণেই মূলত পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন দশা চলেছিল। যেকোনো সংস্করণেই এটি ২০১১ (১টি ম্যাচ) সালের পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম সিরিজ জয়।

পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক ম্যাচের কোনো সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগের জয় ছিল ২০০০ সালে, ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ। এরপর খেলা ২৪টি সিরিজের মধ্যে পাকিস্তান জিতেছে ২০টি, আর বাকি ৪টি সিরিজ হয় ড্র। এ ছাড়া ২০২ রানের জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ। পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই জয়ের মাহাত্ম্য কতটা!

যে বলে সিলস পেলেন ৬ উইকেট।
যে বলে সিলস পেলেন ৬ উইকেট। এএফপি

আর এই কীর্তির পেছনে বড় অবদান ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুজনের। কাল রাতে তৃতীয় ম্যাচে বল হাতে ১৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন পেসার জেইডেন সিলস। সিলসের ১৮ রানে ৬ উইকেট ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় সেরা বোলিং। তাঁর বোলিং তোপেই পাকিস্তান নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে দশম সর্বনিম্ন ৯২ রানে গুটিয়ে যায়।

পাকিস্তানের টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকেই আউট করেন সিলস। এর মধ্যে দুই ওপেনার সাইম আইয়ুব, আবদুল্লাহ শফিক ও চার নম্বরে নামা অধিনায়ক রিজওয়ানকে কোনো রানই করতে দেননি এই পেসার। তিনে নামা বাবর আজমকে আউট করেছেন ৯ রানে। ২৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরই আসলে পাকিস্তান ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেছেন সালমান আগা, মোহাম্মদ নওয়াজ করেছেন অপরাজিত ২৩।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৯৪ রান তোলে শাই হোপের কল্যাণে। সপ্তম উইকেট জুটিতে হোপে জাস্টিন গ্রিভসকে সঙ্গে নিয়ে ৫০ বলে ১১০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। দুজনে মিলে শেষ ৭ ওভারে রান তোলেন ১০০। ২৪ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন গ্রিভস। ৯৪ বলে অপরাজিত ১২০ রান করেন হোপ।

১৮তম সেঞ্চুরি করেছেন হোপ
১৮তম সেঞ্চুরি করেছেন হোপ, এএফপি

হোপের ওয়ানডে সেঞ্চুরির সংখ্যা এখন ১৮, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তিনি ডেসমন্ড হেইন্সকে (১৭) পেছনে ফেলেছেন, এখন তার সামনে শুধু ক্রিস গেইল (২৫) ও ব্রায়ান লারা (১৯)।

এই ১৮ সেঞ্চুরি করতে হোপ খেলেছেন ১৩৭ ইনিংস। এর চেয়ে কম ইনিংসে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন বাবর আজম (৯৭), হাশিম আমলা (১০২), ডেভিড ওয়ার্নার (১১৫) ও বিরাট কোহলি (১১৯)।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৯৪/৬ (হোপ ১২০* , গ্রিভস ৪৩* , আবরার ২-৩৪)
পাকিস্তান: ৯২ (আগা ৩০, নওয়াজ ২৩*; সিলস ৬/১৮, মোতি ২/৩৭)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ২০২ রানে।
ম্যাচসেরা: শাহ হোপ
সিরিজসেরা: জেইডেন সিলস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.