২৮০ ধরে কৌশল সাজানো

তৃতীয় ওয়ানডে

0
166

চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে কয়েক দিন ধরেই ব্যাটিং নিয়ে নিয়মিত কথা বলতে দেখা যাচ্ছে তামিম ইকবালকে। তাঁর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করছেন কোচ। এ ওপেনারকে রানে ফেরাতে চন্ডিকা যেমন চেষ্টা করছেন, তেমনি জেমি সিডন্সও এক নেট থেকে অন্য নেটে দৌড়ঝাঁপ করছেন বাকি ব্যাটারদের ছন্দে পেতে। মুশফিকুর রহিমরা নেট সেশনে ভালোও করছেন। বেশিরভাগ শটই নিখুঁত খেলেন তাঁরা।

এই সেশনগুলোতে সবকিছু ঠিকঠাক হলেও ব্যাটাররা গড়বড় করে ফেলছেন ২২ গজে। টপঅর্ডার থেকে টেলএন্ড পর্যন্ত সমস্যায় জেরবার। সে কারণেই কিনা ইনটেন্ট, ইমপ্যাক্ট শব্দ দুটোও আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। ক্রিকেটাররা এখন সংগ্রাম করছেন রানে ফিরতে; সেট হয়ে আউট হওয়ার রোগ সারাতে। এই রোগমুক্ত হওয়ার উপযুক্ত জায়গা হতে পারে চট্টগ্রাম, যেখানে রানের উইকেট থাকে। লিটনদের কেবল আড়মোড়া ভেঙে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে হবে। স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ গতকাল সে আহ্বানই জানালেন ব্যাটারদের উদ্দেশে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে আজ ব্যাটারদের কাছ থেকে বড় ইনিংস চান তিনি।

পাঁচ বছর ধরেই চট্টগ্রামের উইকেটে বেশ পরিবর্তন এসেছে। ধীরে এবং ধরে খেলতে পারলে গড়ে ২৮০ রান করা যায়। হেরাথও কৌশলী হওয়ার পক্ষে। ইংল্যান্ডের জেসন রয় বা ডেভিড মালান যেমন কৌশল নিয়ে সেঞ্চুরি ইনিংস খেলেছেন মিরপুরে। এই কাজটিই কেন যেন করতে পারছেন না সাকিব-তামিমরা। থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারছেন না। ওপেনার তামিম ইকবাল তো দুই ম্যাচেই ৩০ ছোঁয়া রানে আউট হয়েছেন। নাজমুল হোসেন শান্ত বা সাকিব আল হাসান হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে নিয়ে যেতে পারলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারত।

হেরাথ তাই একটি বার্তা দিয়ে রাখলেন ব্যাটারদের উদ্দেশে, ‘স্পিনার ও ফাস্ট বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকবে উইকেট কিছুটা শুষ্ক থাকায়। ফাস্ট বোলারদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। স্পিনারদের ক্ষেত্রেও তাই। আসলে চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে ব্যাটারদেরই। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে তাদের।’

চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটারদের অনুকূলে থাকলেও খুব বেশি বড় ইনিংস নেই। এই ভেন্যুতে তিনশ প্লাস ইনিংস আছে তিনটি– ভারতের ৪০৯, শ্রীলঙ্কার ৩০৯, বাংলাদেশের ৩০৬। বাকি স্কোরের একটা বড় অংশই ২০০ থেকে ২৯০ রানের। জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে অলআউট করার ঘটনাও রয়েছে। সেগুলো এক যুগেরও বেশি পুরোনো রেকর্ড। ২০১৮ সাল থেকে চট্টগ্রামে লো স্কোরিং উইকেট তেমন একটা দেওয়া হয় না। আজও হয়তো থাকবে না। সে কারণেই হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে জ্বলে উঠতে হবে ব্যাটিং ইউনিটকেই।

এক দিনের ক্রিকেটে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ শেষবার হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার কাছে। এর পর থেকে উন্নতির ধারায় সিরিজ জিতে এগিয়েছে দুর্বার গতিতে। ২০১৫ সাল থেকে অন্য রকম একটি দল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। এই চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কোচিং এবং পরিকল্পনায় ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। সাত বছর পর সিরিজ হেরে ইংলিশদের কাছে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে, তাতে করে এই লজ্জার হাত থেকে বাঁচা কঠিন। তবে তিন বিভাগে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারলে জয় দিয়েও হতে পারে সিরিজের শেষ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.