কালো রঙের ২৫ মণ ওজনের ‘রাজাবাবু’। বিক্রেতার দাবি, এটি কক্সবাজারের সবচেয়ে বড় গরু। কয়েক দিন ধরে গরুটি বিক্রির চেষ্টা করছেন মালিক শফিকুল ইসলাম (৩৮)। প্রথমে দাম হাঁকা হয় ৯ লাখ টাকা। গতকাল সোমবার চাওয়া হয় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। বিশাল আকারের গরু দেখতে দর্শনার্থীর ভিড় লেগে থাকলেও ক্রেতা নেই।
শফিকুল ইসলাম বলেন, তিন বছর আগে খামারে ‘কালোচান্দ’ নামের একটি গাভির বাছুর হয়। বাছুরটির নাম রাখা হয় ‘রাজাবাবু’। তিন বছরের মাথায় রাজাবাবুর ওজন দাঁড়ায় প্রায় ২৫ মণ। গরুটি সাড়ে সাত লাখ টাকায় বিক্রি করলে প্রতি কেজি মাংসের দাম পড়ে ৭৫০ টাকা। অথচ বাজারে মাংসের কেজি ৯০০ টাকার বেশি।
সাড়ে ৭ লাখ টাকার কমে তিনি রাজাবাবুকে বিক্রি করবেন না। আগামীকাল বুধবার বিক্রি না হলে বৃহস্পতিবার সকালে রাজাবাবুকে তিনি নিজে কোরবানি দেবেন।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়াবাজার এলাকায় শফিকুল ইসলামের বাড়ি। বাড়ির পাশে পাঁচ বছর আগে গড়ে তোলেন আসিজি এগ্রো ফার্ম নামে একটি খামার। খামারে ছোট বড় মিলে গরু ছিল ৮২টি। কোরবানি উপলক্ষে কয়েক দিন আগে বিক্রি করেন ১৫টি গরু। গত রোববার রাজাবাবুকে খরুলিয়ার পশুর হাটে তোলা হয়। কয়েক হাজার মানুষ রাজাবাবুকে দেখতে এলেও কেউ কেনার আগ্রহ দেখাননি। তবে কয়েকজন রাজা বাবুর দাম পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বলেছেন। গতকাল সোমবার রাজাবাবুকে বিক্রির জন্য তোলা হয় রামুর চাকমাকুলের কলঘর বাজারে। সেখানেও দর্শক বেশি, কিন্তু ক্রেতা পাওয়া যায়নি।
শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে মিয়ানমারের হাজার হাজার গরু এনে স্থানীয় খামারিদের পথে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা না পেয়ে কক্সবাজারের বহু খামারি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় খামারিদের ক্ষতির চিন্তা মাথায় রেখে দুই বছর আগে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ রাখে সরকার। কিন্তু চোরাইপথে পশু আনা বন্ধ হচ্ছে না। তাতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শফিকুল ইসলাম একসময় সৌদি আরবে ছিলেন। চাকরি ও ব্যবসা করে যে টাকা উপার্জন করেন, তা দিয়ে নিজের গ্রামে পাঁচ বছর আগে পশুর খামারটি গড়ে তোলেন। শুরুতে লাভের মুখ দেখলেও এখন হতাশ তিনি।
খামারের সুপারভাইজার তারেকুর রহমান (৩০) বলেন, রাজাবাবুর খাবারের পেছনে দৈনিক খরচ ১ হাজার ৪০০ টাকা। প্রতিদিন চারবার করে খাবার দিতে হয়। রাজাবাবুকে ভুট্টা, ভুসি, সয়াবিন, খইলসহ অন্যান্য খাবার খাওয়ানো হয়।