২৫ বছরে বিশ্বে লিভার ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা

0
20
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে বর্তমানে প্রতিবছর ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন

২০৫০ সাল নাগাদ, অর্থাৎ আগামী ২৫ বছরে বিশ্বজুড়ে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। স্থূলতা, মদ্যপান ও হেপাটাইটিস (যকৃতে প্রদাহ) হওয়ার মতো প্রতিরোধযোগ্য সমস্যাগুলো ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করা না হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণাটি করেছে, বিশ্বমানের ক্যানসার তথ্য প্ল্যাটফর্ম ‘গ্লোবাল ক্যানসার অবজারভেটরি (জিসিও)’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে বর্তমানে প্রতিবছর ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমান প্রবণতা চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ বছরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৫ লাখ ২০ হাজারে দাঁড়াবে।

ক্যানসারের যে ধরনগুলোয় আক্রান্ত হওয়ার কারণে প্রাণহানির সংখ্যা বেশি হয়, তার মধ্যে লিভার ক্যানসারের অবস্থান তৃতীয়। গবেষণা প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বছরে ১৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষ প্রাণ হারাবে।

অবশ্য, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল বলেছে, প্রতি পাঁচটি লিভার ক্যানসারের তিনটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

গবেষকদের মতে, লিভার ক্যানসারের প্রধান ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে—মদ্যপান, যকৃতে ভাইরাসজনিত প্রদাহ ও স্থূলতার কারণে যকৃতে চর্বি জমে যাওয়া। এর মধ্যে শেষটিকে এমএএসএলডি নামে ডাকা হয়ে থাকে। আগে এটি ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ’ নামে পরিচিত ছিল।

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষকদের ধারণা, ২০৫০ সালেও হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস লিভার ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসেবে থেকে যাবে।

হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, জন্মের পরপরই টিকা দেওয়া। তবে দরিদ্র দেশগুলোয়, বিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকায় টিকা দেওয়ার হার খুব কম।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যদি টিকার হার না বাড়ে, তাহলে ২০১৫ সাল থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

গবেষকেরা আভাস দিয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১ শতাংশের কারণ হবে মদ্যপান। এটি ২০২২ সালের তুলনায় দুই শতাংশের বেশি।

একই সময়ের মধ্যে স্থূলতার কারণে যকৃতে চর্বি জমাকে কেন্দ্র করে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের হার বেড়ে ১১ শতাংশে দাঁড়াবে। অর্থাৎ আগের তুলনায় এ হার ২ শতাংশ বাড়বে।

লিভার ক্যানসার প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি বলে মত দিয়েছেন গবেষকেরা।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, লিভার ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলে স্থূল মানুষ কিংবা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের যকৃতে চর্বি জমার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা।

প্যারিস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.