৪৬*, ২১, ২৭*, ৪৮, ৭৩*, ৫৯।
এবারের বিপিএলে খুশদিল শাহর ব্যাটিং পারফরম্যান্স। রানের সঙ্গে আরও দুটি তথ্য যোগ করতে হবে। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৩ ছক্কাও তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে। কমপক্ষে ১০০ বল খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটও খুশদিলেরই—১৯৭.১২।
২৭৪ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। ব্যাটিং ছেড়ে এবার বোলিংয়ে আসুন। ৮ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১১টি, যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। বুঝতেই পারছেন, কী দারুণ ছন্দের এক টুর্নামেন্ট কাটাচ্ছেন পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার।
শুধু সংখ্যায় নয়, কার্যকারিতায়ও বেশ এগিয়ে খুশদিল। গতকাল চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ম্যাচটিতেই তাকিয়ে দেখুন। খুশদিল উইকেটে এসেছেন ১১তম ওভারে, ৩ উইকেট হারানো রংপুর তখন কোনোমতে ওভারপ্রতি ৬ রানের বেশি করে রান তুলছে।
এর মধ্যে ফিরে গেছেন ইফতিখার আহমেদও। পরিস্থিতি বুঝে খুশদিল খেলতে শুরু করেন রয়েসয়ে। প্রথম ১২ বলে করেন ৮ রান। এরপর ইনিংসের ১৫তম ওভারে বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধার ওভারে টানা তিন ছক্কা দিয়ে ঝড়ের শুরু করেন। ফিফটিতে পৌঁছে যান ২৬তম বলে। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৭ ছক্কা ও ২ চারে খেলেন ৫৯ রানের ইনিংস। রংপুর তোলে ১৬৪। এ তো গেল ব্যাটিং।
পরে চিটাগং কিংসের রান তাড়ায় নাঈম ইসলাম ও শামীম হোসেন পঞ্চম উইকেটে ফিফটি জুটি গড়ে যখন ভালো একটা অবস্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনো দৃশ্যপটে আবার খুশদিল। বাঁহাতি স্পিনে নাঈমকে এলবিডব্লিউ করে ভাঙেন ৫৩ রানের জুটি। এর পর তো চিটাগং কিংসের ইনিংস আরেক দফা ভাঙনের কবলে পড়ে ১৩১ রানেই আটকে যায়।
খুশদিল এর আগের ম্যাচে সিলেটে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষেও রংপুরকে বাঁচিয়েছিলেন। সেদিনও উইকেটে নেমেছিলেন ১১তম ওভারে। ৩ উইকেটে রংপুরের রান তখন ৭০। গতকাল যে ঝড়টা মারুফের ওপর দিয়ে গেছে, সেই ম্যাচে এটা গেছে নাসুম আহমেদের ওপর দিয়ে। ১৫তম ওভারের প্রথম ৪ বলেই ৪ ছক্কা মেরেছিলেন এই বাঁহাতি। খেলেন ৩৫ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। রংপুর তোলে ১৮৬, পরে ম্যাচ জেতে মাত্র ৮ রানে।
খুশদিল বিপিএলে আগেও দুই মৌসুম খেলেছেন। ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ মৌসুমে তিনি খেলেছেন কুমিল্লার হয়ে। এই ২ মৌসুম মিলিয়ে করেছিলেন ৩০৪ রান ও ১২ উইকেট। অর্থাৎ, এবারই বিপিএলে সেরা সময় কাটাচ্ছেন। এই সেরা পারফরম্যান্সে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারের বড় দাবিদার খুশদিল।
যদিও টুর্নামেন্ট এখনো অনেকটা মাঝপথে। তবে খুশদিল যে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পেতে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন সেটা বলে দেওয়া যায়। ব্যাটিংয়ে শীর্ষে যে দুজন আছেন সেই তানজিদ হাসান (৩০৮) ও জাকির হাসানের (২৯০) দলের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তানজিদের ঢাকা ক্যাপিটালস ৮ ম্যাচে জিতেছে ১টিতে, সিলেট ৭ ম্যাচে ২টিতে। বোলিংয়ে খুশদিলের ওপরে আছেন তাসকিন আহমেদ, আকিফ জাভেদ ও আবু হায়দার রনি। এদের তো খুশদিলের মতো এত রান নেই!
অন্য কিছুও হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের বাকি পথে দারুণ কিছু করতে হবে অন্যদের। তারকাহীন বিপিএলে কে করবেন তা?
আর খুশদিল বিপিএল ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেনও না। রংপুর রাইডার্সে এই মুহূর্তে যেসব বিদেশি ক্রিকেটার আছেন তারা পুরো মৌসুম জুড়েই থাকবেন বলে জানিয়েছেন রংপুর পরিচালক শাহরিয়ার তানিম।