২২৮ রান করেও জেতার আশা ছিল হৃদয়ের

0
10
১০০ রান করেছেন হৃদয়, রয়টার্স

সেঞ্চুরি করে এসে হারের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেয়ে বড় যন্ত্রণার আর কিছু আছে কি না, সেটা ক্রিকেটাররাই ভালো বলতে পারবেন। সেঞ্চুরির রাত হবে উপভোগের রাত। তা নয়, দুবাইয়ে আজ তাওহিদ হৃদয়কে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেও সংবাদ সম্মেলনে এসে জবাব দিতে হলো দলের ব্যাটিং–ব্যর্থতা নিয়ে করা প্রশ্নের।

ভারতের কাছে ম্যাচটা বাংলাদেশ ৬ উইকেটে হারলেও হৃদয়ের প্রথম সেঞ্চুরির আরেকটা বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। তিনি সেঞ্চুরি করেছেন ম্যাচের মধ্যে পাওয়া চোটের সঙ্গে লড়াই করে। দল মাত্র ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর তাঁর সেঞ্চুরি আর জাকের আলীর ৬৮ রানের সৌজন্যেই বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত করতে পেরেছে ২২৮ রান।

ম্যাচ শেষে হৃদয়ের আফসোস, তিনি যদি মাংসপেশির চোটে না পড়তেন এবং জাকেরও যদি শেষ পর্যন্ত খেলে আসতে পারতেন; ম্যাচের ফল অন্যরকমও হতে পারত। হৃদয় বলেছেন, ‘আমি আর জাকের চেষ্টা করেছি। জাকের যদি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারত, রানটা ২৭০ হতো, তাহলে হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারত।’ পরে আরেক প্রশ্নে আফসোস করেছেন নিজের চোট নিয়ে, ‘আমার ক্র্যাম্পটাই (মাংসপেশির টান) সমস্যা করেছে। ওটা না হলে আরও ২০–৩০ রান বেশি করতে পারতাম।’

ফিফটি করার পর চারবার মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন হৃদয়
ফিফটি করার পর চারবার মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন হৃদয়, এএফপি

রানটা ২৭০ থেকে ২৮০–এর কাছাকাছি নিতে পারলে ভারতকে হারানো সম্ভব হতে পারত বলে মনে করেন হৃদয়। বাংলাদেশের ২২৮ রান টপকে ম্যাচ জিততে ভারত ৪৭তম ওভার পর্যন্ত খেলেছে, এটাকেই নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি হিসেবে দেখালেন বাংলাদেশ দলের এই ব্যাটসম্যান, ‘এই উইকেটে ব্যাটিং করা অতটা সহজ ছিল না। তারাও ৪৭তম ওভারে গিয়ে জিতেছে। আমাদের ৩০–৪০ রান কম হয়েছে।’

টসে হেরে আগে ফিল্ডিং করতে হয়েছে ভারতকে। তবে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা এতে অখুশি হননি। টসের পর বলেছেন, জিতলে তিনি ফিল্ডিংই নিতেন। বাংলাদেশের শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয় দেখেও মনে হয়েছে, টসে হেরে ক্ষতি হয়নি ভারতের। তবে টস নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরের চিন্তাটা ছিল ভিন্ন। হৃদয় বলেছেন, ‘টসে জিতলে ব্যাটিং করারই পরিকল্পনা ছিল আমাদের। শুরুতে উইকেট হারানোয় রান কম হয়েছে।’

শুরুর বিপর্যয়ের পরও জাকের আলীর সঙ্গে হৃদয়ের ১৫৬ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরতে পেরেছিল বাংলাদেশ। নিজেদের মধ্যে জুটি গড়া নিয়েই আলোচনা করেছেন তাঁরা। পরিকল্পনা করেছেন, যত বেশি সম্ভব সময় একসঙ্গে থেকে দলের রানটা বাড়িয়ে নিতে হবে। তবে ভারতীয় স্পিন বাধা হয়েছে তাদের, ‘ওই সময় স্পিনারদের খেলা সহজ ছিল না। তারা ভালো বোলিং করে, ভালো জায়গায় বল ফেলেছে। পরে আমাদের রিশাদও ভালো বল করেছে। স্পিন বল খেলাটা সহজ ছিল না এখানে।’

সে জন্য বেশ কিছু ডট বলও দিয়েছেন হৃদয়। তবে তাঁর বিশ্বাস ছিল, পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে পরে সেটা পুষিয়ে নিতে পারবেন। তিনি তো এমনও বলেছেন, ২২৮ রান করে তা অনেকটা পুষিয়ে নেওয়াও গেছে। এমনকি এই রান করেও ম্যাচ জেতা সম্ভব বলে মনে হচ্ছিল তাঁর কাছে, ‘আমার মনে হয়েছে এই রান নিয়েই আমরা লড়াই করব। কিছুটা করেছিও। কিন্তু কিছু বাউন্ডারি হয়ে গেছে। নইলে ওরাও ব্যাট সহজে করতে পারেনি। খেলোয়াড় হিসেবে যেটুকু রানই করি না কেন, জেতার জন্যই খেলতে হবে।’

সেঞ্চুরি করেন হৃদয়ও
সেঞ্চুরি করেন হৃদয়ও, রয়টার্স

চোট নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাটিং করার পর আর ফিল্ডিং করেননি হৃদয়। তবে খেলা শেষে জানিয়েছেন, চোটের অবস্থা তখন অনেকটাই ভালো। শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। রাওয়ালপিন্ডিতে ২৪ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে পরের দুই ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। দুবাই ছাড়বে কাল রাতে। হৃদয়ের আশা, পাকিস্তানের ভিন্ন কন্ডিশনে তাঁরাও ফিরে পাবেন নিজেদের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.