২০২৫ সালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ হবে, বললেন মার্কিন জেনারেল

0
202
দক্ষিণ চীন সাগরে টহলরত যুদ্ধবিমানবাহী মার্কিন রণতরি ইউএসএস থিওডর রুজভেল্ট, ফাইল ছবি: রয়টার্স

সম্ভাব্য ওই যুদ্ধে ওয়াশিংটনের অবস্থান বিষয়েও মত প্রকাশ করেছেন জেনারেল মাইক মিনিহান। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, প্রতিরোধ। তবে ‘যদি প্রয়োজন হয়, চীনকে পরাজিত করা।’

মাইক মিনিহান তাঁর স্বাক্ষরিত এক অভ্যন্তরীণ চিঠিতে এই অভিমত তুলে ধরেছেন। চিঠিটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এ চিঠি। এটার বিষয়বস্তু নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে এনবিসি নিউজ। চিঠিতে যে তারিখ লেখা রয়েছে, সেটি চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি।

চিঠিতে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এমন দুটি বিষয়ের শিরোনাম ‘চূড়ান্ত পরিস্থিতি’ ও ‘ঝুঁকি’। এ ছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েকটি লক্ষ্যমাত্রার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে জেনারেল মিনিহান বলেছেন, ‘যা ভাবছি, আশা করি তা ভুল (হবে)। তবে আমার ধারণা বলছে, ২০২৫ সালে আমরা চীনের সঙ্গে যু্দ্ধে জড়িয়ে যাব।’

তাইওয়ানের আকাশে চীনের যুদ্ধজাহাজের মহড়া

তাইওয়ানের আকাশে চীনের যুদ্ধজাহাজের মহড়া 
ফাইল ছবি: এএফপি

এমনটি ভাবার কারণও তুলে ধরেছেন জেনারেল মিনিহান। তাঁর ভাষ্যমতে, আগামী বছরে তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের দিকে চীনের নজর থাকবে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের কাছে এই নির্বাচনের ফলাফল এই অঞ্চলে সামরিক আগ্রাসন বাড়ানোর একটি কারণ হতে পারে। একই বছরে যুক্তরাষ্ট্রেও নির্বাচন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রও নিজেদের নিয়ে অনেকটা ব্যস্ত থাকবে। চীন এই সুযোগ নিতে পারে।

চিঠিতে উল্লেখ করা ‘চূড়ান্ত পরিস্থিতি’ শিরোনামের অধীনে জেনারেল মিনিহান চীনের একটি দ্বীপপুঞ্জে হামলা চালিয়ে জয়লাভের কথা বলেছেন। ওই দ্বীপপুঞ্জের বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি তিনি। তবে দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চল ঘিরে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে।

চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার মোবিলিটি কমান্ডের (এএমসি) ও বিমানবাহিনীর সব কমান্ডারকে কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনাগুলোর একটি হলো, আগামী ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখের মধ্যে তাঁদের সবাইকে চীনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার জন্য প্রস্তুতিমূলক সব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জেনারেলকে জানাতে হবে।

সব সদস্যকে তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য ও জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগের নম্বর হালনাগাদ করতে বলা হয়েছে বলে এনবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

মার্চের মধ্যে এয়ার মোবিলিটি কমান্ডের সব সদস্যকে ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর সুরাহা করতে বলা হয়েছে। এ সময়ে তাঁদের একবার নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রের ‘লিগাল অফিসে’ যেতে বলা হয়েছে, যেন তাঁরা আইনগতভাবে প্রস্তুত হন।

সদস্যদের প্রশিক্ষণে কিছু ঝুঁকি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে নোটে বলা হয়েছে, ভেবেচিন্তে এগোতে হবে, অবিবেচকের মতো নয়। এতে বলা হয়, ‘আপনি যদি প্রশিক্ষণের সময় স্বস্তিদায়ক অবস্থা বজায় রাখতে চান, তাহলে আপনি যথেষ্ট ঝুঁকি নিচ্ছেন না।’

এয়ার মোবিলিটি কমান্ডের প্রায় ৫০ হাজার সদস্য রয়েছে। তাঁদের হাতে রয়েছে ৫০০ বিমান। যুদ্ধক্ষেত্রে রসদ ও জ্বালানি সরবরাহের দায়িত্বও রয়েছে বিমানবাহিনীর ওপরে।

জেনারেল মিনিহান ইঙ্গিত দিয়েছেন, বাণিজ্যিক ড্রোনের ব্যবহারও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। চীনের সঙ্গে সংঘাত শুরু হলে এগুলো ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

একটি উড়োজাহাজ থেকে যেন ১০০ চালকবিহীন ড্রোন (ইউএভি) সরবরাহ করা যায়, সে জন্য কেসি-১৩৫ ইউনিটগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেনারেল মিনিহান এগুলোকে নিজের দিক থেকে প্রথম আট মাসের নির্দেশনা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এখানে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.