
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ৪৩তম বিসিএসের গেজেট–বঞ্চিতদের অনশনের ১৩০ ঘণ্টা পার হয়েছে। গেজেটভুক্ত করে যোগদান নিশ্চিতকরণ এবং ‘সরকারি চাকুরি ভেরিফিকেশন নীতিমালা’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে গত মঙ্গলবার আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন তাঁরা।
ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি ও জাতীয় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আজ রোববার দুপুরে এই অনশনে এসে তাঁদের দাবির প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়েছেন।
এ সময় নুরুল হক বলেন, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ স্লোগানের মাধ্যমে একটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকারের কাছে মেধার অধিকার আদায়ের জন্য আমরণ অনশন করতে হচ্ছে, এর চেয়ে লজ্জার আর কিছুই হতে পারে না। এমনকি যে সরকারে নিজেদের ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছে, কিছু হলেই যেখানে তাঁদের বিদ্যুৎগতিতে ছুটে আসার কথা, সেখানে তাঁদের বিন্দুমাত্র দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।’
নুরুল হক বলেন, বাংলাদেশে চাকরির আবেদন করার জন্য এক হাজার টাকার প্রয়োজন পড়ে অথচ অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাই অনেক সময় আবেদনের ফির জন্য অনেক মা–বাবাকে জমি বিক্রি করতে হয়। চাকরিদাতা বা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনের খরচ বহন করা।
নুরুল হক আরও বলেন, ‘এক চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে দুই থেকে তিন বছর লেগে যায়, যা চাইলেই এক বছরে শেষ করা যায়। আমরা চাই, ছাত্রলীগের পোস্টধারী নেতা–কর্মী ব্যতীত অন্য সব মেধাবী শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে নিয়োগ দিতে হবে।’
এ সময় অনশনরত ব্যক্তিদের উদ্দেশে নুরুল হক বলেন, ‘আপনারা আল্টিমেটাম দেন। আমরা আপনাদের পাশে থেকে প্রয়োজনে মন্ত্রণালয় ঘেরাও করব। আপনাদের চাকরি ফিরে পেতে আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমি এখান থেকে গিয়ে শেষবারের মতো জনপ্রশাসন সচিবের সাথে কথা বলব, আপনাদের বিষয়ে তারা কী ভেবেছেন, এই বিষয়ে।’
এর আগে ৪৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষায় গেজেট–বঞ্চিত অনশনরত তমা রায় বলেছিলেন, ‘আমরা চার মাস ধরে ৪৩তম বিসিএসের দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া ২২৭ জন একটি গেজেটের জন্য অপেক্ষা করছি। সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল মহল থেকে আমাদের বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছে। সিনিয়র সচিব স্যার ৯ জানুয়ারি বলেছিলেন, দুই কর্মদিবসের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হবে, কিন্তু আজ প্রায় চার মাস হয়ে যাওয়ার পরও আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গেজেটটি পাইনি।’
তমা রায় আরও বলেন, ‘এখন আমরা একটি গেজেটের অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই আমাদের গেজেটটি প্রকাশিত হবে। চূড়ান্তভাবে আমাদের ৪৩তম বিসিএসের গেজেটটি প্রকাশিত হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা এই অনশন চালিয়ে যাব।’
জানতে চাইলে ৪৩তম বিসিএসের কৃষি ক্যাডারে গেজেট–বঞ্চিত মোহাম্মদ আলী নেওয়াছ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে প্রথম গেজেটটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু পরে ২২৭ জনকে বাদ দিয়ে আবার গেজেট প্রকাশ করা হয়। আমাদের কেন গেজেটভুক্ত করা হচ্ছে না, তার আসল কারণ সুস্পষ্টভাবে জানানো হোক। আর যদি কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকে, তাহলে আমাদের সবাইকে গেজেটভুক্ত করা হোক।’