কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের নাফ নদীর ওপার মিয়ানমারে ফের গোলার শব্দ শোনা গেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত উপজেলার হোয়াইক্যংয়ে খারাংখালী সীমান্তে মিয়ানমারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পায় সীমান্তের লোকজন।
এদিকে এখনও মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ৯ জন রোহিঙ্গাকে অনুপ্রবেশকালে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। এর আগে চলতি মাসে প্রায় চারশ’ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছিল সীমান্তে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, গত রাত থেকে আজ জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত থেমে থেমে খারাংখালী সীমান্তে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। ফলে সীমান্তের কাছাকাছি চিংড়ির প্রজেক্টে থাকা লোকজন ভয়ে পালিয়ে এসেছে। তবে আগের তুলনায় গোলার শব্দ অনেকটা কমেছে।
হোয়াইক্যংয়ে বেড়িবাধের কাছাকাছি চিংড়ি প্রজেক্টে বসবাসকারী দানু মিয়া (৬৪) বলেন, গত রাত থেকে মিয়ানমারের ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার সকালে কয়েকবার গোলার বিকট আওয়াজ পেয়ে পার্শ্ববর্তী বিজিবির চৌকির কাছাকাছি দৌড়ে আসি। এই সীমান্তের ওপারে এখনও যুদ্ধ চলমান আছে। ফলে সেখান থেকে এখনও গোলার বিকট শব্দ পাচ্ছি। এতে আমরা সীমান্তের কাছাকাছি থাকা চিংড়ি চাষিরা ভয়ে আছি।
আগের তুলনায় সীমান্তে গোলার শব্দ কমছে উল্লেখ করে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, এখনও খারাংখালী সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে গুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় লোকজন। গত রাত এবং আজ সকালে মিয়ানমার থেকে এপারে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন লোকজন।
এদিকে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে গত তিনদিন ধরে (শুক্রবার পর্যন্ত পর্যন্ত) শাহপরীর সীমান্তে তেমন কোন গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সীমান্তের লোকজন। তবে এখনও সীমান্তবাসীদের পুরোপুরি আতঙ্ক কাটেনি। ওপারে চলমান জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্য যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ায় অনুপ্রবেশেরের চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। ফলে সীমান্তে বিজিবি ও নাফ নদীতে কোস্ট গার্ড সদস্যরা টহল অব্যাহত রেখেছে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড চট্টগ্রাম পূর্বজোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান বলেন, সীমান্ত দিয়ে নতুন করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমর ইতোমধ্য ২ শতাধিকের বেশি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করেছি। ওপারের চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে নাফ নদী শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা থেকে আমরা (কোস্ট গার্ড) টহল জোরদার রেখেছি।
শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটের দোকানি মোহাম্মদ সেলিম বলেন, শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদী শান্ত রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত দ্বীপের জেটিতে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।