নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ছে

১১২ দিনের পরিবর্তে পাবেন ১২০ দিন

0
109
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়- পিআইডি

নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৮ দিন বাড়িয়ে ১২০ দিন করেছে সরকার। সেই সঙ্গে এই ছুটি নারী শ্রমিকের ইচ্ছা অনুযায়ী তার সুবিধা মতো সময়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এমন বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০২৩’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে নারী শ্রমিকরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতেন ১৬ সপ্তাহ। এটি তিনি মা হয়ার আগে ও পরে মিলিয়ে পেতেন। এখন এটি পরিবর্তন করে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৮ দিন বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এই ছুটি নারী শ্রমিক তার সুবিধা মতো সময়ে নিতে পারবেন।

তিনি বলেন, এই ছুটি তিনি (নারী শ্রমিক) মা হওয়ার আগেও নিতে পারবেন, পরেও নিতে পারেন। এটা তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। হতে পারে বাচ্চা হওয়ার দুই বা তিন সপ্তাহ আগে থেকে নিয়ে বাকিটা কাটাবেন। অথবা উনি আগেও নিতে পারেন, পরে নাও নিতে পারেন। এটা তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে।

তিনি আরও বলেন, শ্রম আইনটা হলো আমাদের ব্যক্তি খাতের যেসব কল-কারখানা আছে তাদের জন্য। শ্রম আইন যেখানে প্রযোজ্য তাদের জন্য এটা (নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি)।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে আইনে ছিল ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ২০ শতাংশ শ্রমিকের স্বাক্ষর যুক্ত বা তাদের সমর্থনসহ আবেদন না করলে ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারতেন না। সেটিকে এখন ভাগ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে শ্রমিকের সংখ্যা যদি ৩ হাজারের কম হয়, তাহলে ২০ শতাংশই থাকবে।

আর ৩ হাজারের বেশি হলে ১৫ শতাংশ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন এবং তারা যদি সে অনুযায়ী আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেন, তাহলে সেখানে তারা করতে পারবেন- বলেন মো. মাহবুব হোসেন।

তিনি বলেন, গ্রুপ অব কোম্পানি হলে আগে ছিল ৩০ শতাংশ শ্রমিক যদি চাইতেন, তখন এটা করতে পারতেন। এখন এটা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। মানে শ্রমিকের কল্যাণটা নিশ্চিত করার জন্য আইনটা তাদের জন্য আরও সহজ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নারী শ্রমিকরা মাতৃত্বকালীন ১২০ দিনের যে ছুটি পাবেন, তা বেতনসহ। মূল আইনেই বলা হয়েছে বেতনসহ, এখানে এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটা যেহেতু মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে, সুতরাং এটা আছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যদি কোনো শ্রমিক সংক্ষুব্ধ হন, তাহলে তিনি শ্রম আইনে মামলা করতে পারেন। বাংলাদেশে ১৩টি শ্রম আদালত আছে, যেখানে ডিসট্রিক্ট জাজ পর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন। রায় বিপক্ষে গেলে আপিল করতে পারেন। আপিল করার জন্য শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল আছে, যেখানে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজ করেন। এই ট্রাইব্যুনালের যে রায় হবে, তা হাইকোর্টের রায়ের সমান হবে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে আপিল বিভাগে যেতে হবে।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। কোনো শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতী, লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অর্থাৎ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নির্বিশেষে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করা যাবে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.