ভিআইপি বক্সে দাঁড়ানো শাহরুখ খানকে টিভি ক্যামেরা যতবার খুঁজে নিচ্ছিল, ততবারই তিনি ছিলেন মুখে মাস্ক পরা অবস্থায়। তবে কলকাতা নাইট রাইডার্স যখন লক্ষ্য থেকে নিশ্বাস দূরত্বে, তখনই মাস্কটা খুলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে শুরু করলেন। ‘বলিউড বাদশাহ’র মুখে লেগে থাকল চওড়া হাসি।
দুই আইয়ার (অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ও ব্যাটসম্যান ভেঙ্কটেশ আইয়ার) মিলে কলকাতাকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতেই মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করলেন শাহরুখ। আনন্দের আতিশয্যে ভাসতে দেখা গেল ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকপক্ষের বাকি সদস্যদেরও। বাজতে লাগল কলকাতার থিম সং—করব, লড়ব, জিতব রে….। যদিও আজ এই মুহূর্তে ‘ক্রিয়ার কাল’ ভবিষ্যৎ থেকে বদলে বর্তমানে আসা উচিত। মানে করেছি, লড়েছি, জিতেছি রে…।
কলকাতা করে দেখাল, আইপিএলের শিরোপাও জিতে নিল। তবে ফাইনালে লড়াইটা করতে হলো না তাদের। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ যে ফাইনাল জমাতেই পারল না!
অথচ আইপিএলে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড এই মৌসুমেই গড়েছিল সানরাইজার্স, যা স্বীকৃত ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি লিগেও সর্বোচ্চ। মৌসুমজুড়ে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে একের পর এক রেকর্ড ভাঙা–গড়ার খেলায় মেতেছিল তারা। দলটির নামটাই হয়ে গিয়েছিল ‘রানরাইজার্স’। সেই দলটিই কি না আজ আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে একপেশে ফাইনাল উপহার দিল!
চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে কলকাতার বিপক্ষে শিরোপার লড়াইয়ে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১১৩ রানে গুটিয়ে গেল হায়দরাবাদ, যা এখন পর্যন্ত আইপিএলের ১৭ ফাইনালের মধ্যে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ তো বটেই; ফাইনালে কোনো দলের প্রথমবার অলআউট হওয়ার ঘটনাও। ১১৪ রানের ‘মামুলি’ লক্ষ্যটা কলকাতা ছুঁয়ে ফেলল ৫৭ বল আর ৮ উইকেট হাতে রেখে, চ্যাম্পিয়ন হলো ১০ বছর পর।
বলিউড কিংবদন্তি শাহরুখ খানের দলের এটি তৃতীয় আইপিএল শিরোপা। এর আগের দুটি জিতেছিল ২০১২ ও ২০১৪ সালে। দলটির তিনটি শিরোপা জয়ের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকলেন গৌতম গম্ভীর; আগের দুবার অধিনায়ক হিসেবে, এবার পরামর্শকের ভূমিকায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১৮.৩ ওভারে ১১৩ অলআউট
(কামিন্স ২৪, মার্করাম ২০, ক্লাসেন ১৬, রেড্ডি ১৩; রাসেল ৩/১৯, স্টার্ক ২/১৪, হর্ষিত ২/২৪, বরুণ ১/৯, নারাইন ১/১৬, অরোরা ১/২৪)
কলকাতা নাইট রাউডার্স: ১০.৩ ওভারে ১১৪/২
(ভেঙ্কটেশ ৫২*, গুরবাজ ৩৯, শ্রেয়াস ৬*, নারাইন ৬; কামিন্স ১/১৮, শাহবাজ ১/২২)
ফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৮ উইকেট জয়ী।