হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

0
9
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

হজযাত্রাকে সহজ ও নিরাপদ করতে ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ চালু করে হজযাত্রীদের সার্বক্ষণিক সেবা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হজ পালন সহজ করার জন্য আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি। এই সুযোগকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো। একজন হজযাত্রীও যেন কোনো ভোগান্তির শিকার না হন, সেই প্রচেষ্টা থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশেই একটি হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার স্থাপন করতে হবে। যাতে বাংলাদেশ বসেই সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা যায়। কল সেন্টারে আসা অভিযোগগুলো যেন সঙ্গে সঙ্গে মনিটরিং করা যায়। এছাড়া একটি ওয়েবসাইটও করতে হবে। ওয়েবসাইটে হজযাত্রীরা সবাই যুক্ত থাকবে। ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানানো ও হারিয়া যাওয়া ব্যক্তির লোকেশন লোকেশন খুঁজে পাওয়া যাবে।

এ সময় ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে কলসেন্টারে কী ধরনের অভিযোগ আসছে তা মনিটরিং করার নির্দেশও দেন তিনি। ড. ইউনূস বলেন, অভিযোগগুলো লিপিবদ্ধ করতে হবে। এর মধ্যে কতগুলো সমাধান হলো তার তথ্যও থাকতে হবে। একই অভিযোগ যাতে পরের বছর না আসে সেজন্য আলোচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হজ এজেন্সির সংখ্যা ১২৭৫টি। এর মধ্যে হজ কার্যক্রমের জন্য যোগ্য এজেন্সি ৯৪১টি, হজযাত্রী নিবন্ধনকারী এজেন্সি ৭৫৩টি এবং লিড এজেন্সি ৭০টি। এই এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব কী হবে তা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে বুকলেট আকারে ও অনলাইনে প্রকাশের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। একইসঙ্গে কোনো এজেন্সি দায়িত্ব পালন না করলে তার লাইসেন্স বাতিলেরও নির্দেশ দেন তিনি।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা থেকে এজেন্সিগুলো রিভিউ করতে হবে। এজেন্সির প্রশিক্ষণ আছে কি না তা মনিটরিং করতে হবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে এজেন্সিগুলোতে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরি করে ফেলতে হবে। এই ক্যাটাগরির মান পূরণে যে এজেন্সিগুলো ব্যর্থ হবে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। পুরো হজ প্রক্রিয়াকে সহজ ও স্পষ্ট হতে হবে। সরকারের ও এজেন্সির দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে লিখিত থাকতে হবে।’ কেউ হারিয়ে গেলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে, লাগেজ হারিয়ে গেলে বা অন্য কোনো ধরনের সমস্যায় করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট গাইডলাইন তৈরিরও নির্দেশ দেবন তিনি। পাশাপাশি নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্ব দেয়ার কথাও বলেন তিনি।

হজযাত্রীরাদের জন্য বিষয়ভিত্তিক ভিডিও তৈরির নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানের ভিডিও থাকতে হবে। অসুস্থ হয়ে পড়লে, হারিয়ে গেলে, কোরবানি দিতে গিয়ে কোনো সমস্যা হলে করণীয় কী এমন ভিডিও যাত্রীদের দেখিয়ে দিলে তারা মনোবল পাবেন। প্রস্তুত থাকতে পারবেন। এছাড়া, পরের বছর থেকে হজ ক্রেডিট কার্ড চালু ও লাগেজ ব্যবস্থাপনার জন্য ট্যাগ কপি করে তালিকা করে রাখার পরামর্শও দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এবছর সরকারি খরচে কাউকে হজে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এই সভায় উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.