সমকাল: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এবং তথ্যপ্রযুক্তি দেশের অন্যতম রপ্তানি আয়ের উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে হাই-টেক পার্ক কী ভূমিকা রাখতে পারে?
জুনাইদ আহমেদ পলক: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে স্মার্ট নাগরিকের পাশাপাশি স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে তথ্যপ্রযুক্তিসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সরাসরি ভূমিকা রাখছে।
এ ছাড়া হাই-টেক পার্কে রপ্তানিমুখী উচ্চ প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, যাদের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে অচিরেই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। পাশাপাশি এখানে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি বিদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করে অদূর ভবিষ্যতে দেশে বিপুল রেমিট্যান্স পাঠাবে। তাই এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে হাই-টেক পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সমকাল: স্থান বরাদ্দ পাওয়া অনেক প্রতিষ্ঠান হাই-টেক পার্কে ছেড়ে দিচ্ছে। তাদের অভিযোগ, যেসব এলাকায় হাই-টেক পার্ক হয়েছে, সেখানে দক্ষ জনবলের অভাব। এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ কী ভাবছে?
জুনাইদ আহমেদ পলক: স্থান বরাদ্দ পাওয়া অনেক প্রতিষ্ঠান হাই-টেক পার্ক ছেড়ে দিচ্ছে– এমন সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। যেসব এলাকায় হাই-টেক পার্ক হয়েছে, সেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষ জনবলের অভাব থাকতে পারে। এ জন্য হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাব স্থাপন করছে। পাশাপাশি হাই-টেক পার্কগুলোতে সেভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। ফলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অচিরেই দক্ষ জনবল বাড়বে বলে আশা করা যায়। এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৭ হাজার জনকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাই বলা যায়, ভবিষ্যতে হাই-টেক পার্কগুলোতে দক্ষ জনবলের অভাব থাকবে না।
সমকাল: হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা বেশি। সফটওয়্যার, আইটিসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান কম। আইসিটি খাতের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে সরকারের উদ্যোগ কী হতে পারে?
জুনাইদ আহমেদ পলক: হাই-টেক পার্কে সব প্রতিষ্ঠানকে জমি/স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বা যেসব প্রতিষ্ঠান সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করছে, সেখানে ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানার তুলনায় সফটওয়্যার ও আইটি সংক্রান্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অনেক বেশি। দেশের হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে ৮০টি প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার/আইটি নিয়ে কাজ করে। ভবিষ্যতেও আইটি সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান বেশি থাকবে বলে আমি মনে করি।
সমকাল: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, হাই-টেক পার্ক সারাদেশে না ছড়িয়ে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বড় আকারে বিনিয়োগ করলে সিলিকন ভ্যালির মতো একটা শহর গড়ে উঠত। এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ কী ভাবছে?
জুনাইদ আহমেদ পলক: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে সারাদেশের মানুষকে তথ্যপ্রযুক্তি তথা আধুনিক প্রযুক্তির বিষয়ে প্রশিক্ষিত করতে হবে। তাই প্রতিটি জেলা শহরে হাই-টেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এ ছাড়া কালিয়াকৈরসহ কয়েকটি স্থানে বড় পরিসরে বেশি পরিমাণ জমি নিয়ে যেসব হাই-টেক পার্ক গড়ে উঠেছে, সেখানে সিলিকন ভ্যালির মতো স্থাপনা না হলেও একই স্থানে একটি বড় আকারের হাই-টেক বা আইটি ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে। এ পার্কগুলোকে ভবিষ্যতে যেন সিলিকন ভ্যালির আদলে গড়ে তোলা যায়, সে বিষয়ে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট আছে।