জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশের আরেক নাম স্মার্টফোন, যার মাধ্যমে হয় না এমন কাজ খুব কমই আছে। বাসায় বসে সব ধরনের কাজ, পড়াশোনা থেকে শুরু করে বিনোদনের সব চাহিদা মেটানো, কেনাকাটা এমনকি স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইসটির প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবে না। শরীরের ভেতরের খবর জানতে সাধারণত ফিটনেস ব্যান্ড বা স্মার্টওয়াচের সঙ্গে স্মার্টফোনকে যুক্ত করতে হয়।
ধরে নিন, হঠাৎ যদি জ্বর হয় আর স্মার্টফোন দিয়েই জ্বরের তাপমাত্রা মাপা যায়, তাহলে বিষয়টি কেমন হয়? অবাক হবেন না। স্মার্ট প্রযুক্তির দিনবদলের বিশ্বে এটিও সম্ভব। আসলে ‘ফিভারফোন’ নামে নতুন অ্যাপের কথা বলছি, যা স্মার্টফোনকে পরিণত করবে স্মার্টসেবায়। অর্থাৎ, হাতে স্মার্টফোন থাকলে মাত্র কয়েক ক্লিকেই জানা যাবে শরীরের তাপমাত্রার খবর।
স্মার্টফোন মানেই গুচ্ছ গুচ্ছ অ্যাপের সমাহার। আইএনএসএস রিপোর্ট বলছে, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের গবেষক ও বিজ্ঞানী দল সম্প্রতি ফিভারফোন (FeverPhone) নামে বিশেষ স্বাস্থ্য অ্যাপ তৈরি করেছে, যা ফোনের টাচস্ক্রিন এবং ব্যাটারি টেম্পারেচার সেন্সর ব্যবহার করে মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে মানব শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করবে। যার জন্য কোনো অতিরিক্ত হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হবে না। এরই মধ্যে ৩৭ রোগীকে অ্যাপ দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল নির্ভুল বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। ভবিষ্যতে হাতে স্মার্টফোন থাকলে থার্মোমিটারের আর প্রয়োজন হবে না, এমনটা বলা যেতেই পারে।
ফিভারফোন অ্যাপ মূলত বিশেষ সেন্সরে নির্মিত, যা ফোনের ব্যাটারির তাপমাত্রা নির্ধারণ করে। কতক্ষণ সময় ধরে ফোন গরম থাকে, তা পরিমাপ করে তবেই মানবদেহের তাপমাত্রা পরিমাপ জানা যায়। বিশেষ এ সুবিধা পেতে আগ্রহীরা ফোনের পেছনে কোনো স্পর্শ না করে পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরার মতো ধরে রাখতে হবে। এরপর কপালে প্রায় ৯০ সেকেন্ডের জন্য টাচস্ক্রিন ধরে রাখলেই কাজ হয়ে গেল।
সবকিছু বেশ উপযোগী মনে হলেও ফিভারফোন অ্যাপ ব্যবহারে কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও মেনে নিতে হবে। গবেষকরা এমন কিছু বিষয় চিহ্নিত করেছেন, যা কিছু সীমাবদ্ধতার কথা বলে। যেমন– এটি শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়ে বেশি মানের রিডিং (১০১ দশমিক ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বাদ দিয়েছে, অন্যদিকে অ্যাপটি ঘামে ভেজা ত্বকের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। আপাতত শুধু তিনটি মডেলের ফোনে ফিভারফোন ব্যবহারযোগ্য। ধীরে ধীরে সব স্মার্টফোনেই অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে বলে উদ্ভাবকরা জানিয়েছেন।