
স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও অদৃশ্য শক্তি ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আজ শনিবার বিকেলে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জেলা শহরের পুরোনো স্টেডিয়ামে আয়োজিত সম্মেলনে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের অনেকের মনে আছে, স্বৈরাচার পালিয়ে যাবার কয়েক দিন পরে আমি একটি কথা বলেছিলাম যে স্বৈরাচার তো বিদায় হয়ে গেছে, পালিয়ে গেছে, অদৃশ্য শক্তি কিন্তু ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আজকে থেকে প্রায় এক বছর আগের কথা কিন্তু ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’
বাংলাদেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মানুষ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে, সরকার সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবগুলোর ৯০ শতাংশ প্রস্তাব আড়াই বছর আগেই দেশের মানুষের সামনে বিএনপি উপস্থাপন করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করেছে। মতমতের কোনো কোনো বিষয়ে হয়তো মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, মানুষের নিরাপত্তা ও মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের প্রশ্নে কারও সঙ্গে কোনো দ্বিমত নেই। অর্থাৎ বিএনপি এই কাজগুলো করতে চায়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেতা–কর্মীদের ভোগান্তি তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের দলের ৫০ লাখেরও বেশি নেতা–কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছিল।’

নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো মূল্যে নেতা–কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সমাবেশে উপস্থিত সবাইকে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি কারও ব্যক্তিগত কর্মী, নাকি আপনারা ধানের শীষের কর্মী, বলেন তো আমাকে। আপনারা জাতীয়তাবাদী শক্তির কর্মী, জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষ থেকে যখন একটি সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হচ্ছে যেকোনো মূল্যে তা বাস্তবায়ন করা। আজকে যেমন আপনারা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সম্মেলনকে সফল করলেন, ইনশা আল্লাহ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সফল জনরায় আনতে সক্ষম হব।’
নেতা–কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি আপনাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই, যেটা আমি বারবার বলে আসছি, আমাদের প্রত্যেককে অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেন আমাদের নাম ব্যবহার করে, এই দলের নাম ব্যবহার করে, বিএনপির নাম ব্যবহার করে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল না করতে পারে। কেউ যাতে আমাদের নাম ব্যবহার করে জনগণকে আমাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। এই ব্যাপারে আপনাদের প্রত্যেককে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।’