চট্টগ্রামে এক নারীকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সঙ্গে স্বামী পরিচয় দিয়ে এক বাসায় থাকা কাভার্ড ভ্যানচালককে হত্যার জট খুলেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আকরাম উল্লাহ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নারী রোজিনা আক্তার একজন পোশাক কর্মী। ঘটনার পাঁচ দিন পর আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সূত্রবিহীন এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের কথা জানিয়েছে।
গত শনিবার রাতে নগরের ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকার একটি ভবন থেকে আকরাম উল্লাহর (৪৩) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এক মাস আগে রোজিনাকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় ওঠেন আকরাম। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন রোজিনা।
আকরাম নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর ছেলে আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় মামলা করেন। পরে পিবিআই এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। গত সোমবার খুলনার দৌলতপুর থেকে রোজিনাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গত মঙ্গলবার আদালত তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তার রোজিনা জিজ্ঞাসাবাদে আকরামকে শ্বাসরোধে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনার পর তিনি তাঁর বোনের বাড়িতে চলে যান। খুন করার কারণ সম্পর্কে রোজিনা পিবিআইকে বলেছেন, ঘটনার দিন (১ জুলাই) রোজিনাকে ইমোতে সৌদি আরব থেকে কল দেন তাঁর স্বামী কবির মোল্লা। তিনি ব্যক্তিগত বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও করে তাঁকে পাঠাতে বলেন। স্বামীর কথামতো রোজিনা ভিডিও করেন। কিন্তু এগুলো স্বামীর কাছে পাঠাতে পারছিলেন না। তাঁর মুঠোফোনের গ্যালারিতে ভিডিওটি সেভ থাকে। একপর্যায়ে রোজিনার মুঠোফোনে থাকা সেই ভিডিও দেখে তাঁকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ দেন আকরাম উল্লাহ। কিন্তু অসুস্থ থাকায় রোজিনা রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আকরাম ভিডিওটি তাঁর স্বামীসহ আরও কয়েকজনের কাছে পাঠিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন। তখন রোজিনা আকরামের কাছ থেকে মুঠোফোনটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু নিতে না পারায় অণ্ডকোষ চেপে ধরেন। একপর্যায়ে আকরাম বাসার মেঝেতে পড়ে যান। তখন তাঁকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে খুন করেন।
পিবিআই সূত্র জানায়, আকরামের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগে। তাঁর তিন সন্তান রয়েছে। স্ত্রী–সন্তানেরা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। আর তিনি চট্টগ্রাম নগরে কাভার্ড ভ্যান চালান। অপর দিকে রোজিনার স্বামী থাকেন বিদেশে। তাঁর একমাত্র সন্তান থাকেন বড় বোনের সঙ্গে। তিন বছর আগে আকরামের সঙ্গে রোজিনার পরিচয় হয়।
গত এপ্রিল মাসে তাঁরা দুজন স্বামী–স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসাটি ভাড়া নেন।