স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের, তাঁরাও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাচ্ছেন না

0
136
ধীমান সাহা

আগামী ১২ জুন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এবং ২১ জুন গোপালদী পৌরসভা নির্বাচনের দিন ঠিক করা হয়েছে। পৌরসভা দুটির আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দের আগেই মিছিল–সমাবেশ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম এরই মধ্যে দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারণায় নেমেছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রচারণা চললেও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন দুটির দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এসব নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ধীমান সাহার সঙ্গে।

প্রথম আলো: আড়াইহাজারে নির্বাচনী পরিবেশ কেমন দেখছেন?

ধীমান সাহা: ভালো না। বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর অংশগ্রহণ নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের। কিন্তু তাঁরাও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাচ্ছেন না। প্রতীক বরাদ্দের আগেই আওয়ামী লীগের দুজন প্রার্থী নিয়ম ভেঙে প্রচারণা চালাচ্ছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে মিছিল–সমাবেশ করছেন। অথচ তাঁদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

প্রথম আলো: তাঁরা এমনটা কেন করছেন বলে আপনার মনে হয়?

ধীমান সাহা: এর মধ্য দিয়ে তাঁরা ভোটার ও অন্য প্রার্থীদের সামনে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতে চান। তাঁরা নির্বাচনী পরিবেশটাকে ভীতিকর করে তুলতে চান। তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে একপ্রকার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন।

প্রথম আলো: সে ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা কী যথাযথ?

ধীমান সাহা: যথাযথ বলা যায় না। প্রার্থীরা তো প্রকাশ্যেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেগুলো স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তাহলে রিটার্নিং কর্মকর্তারা কেন জানবেন না? কেন তাঁদের লিখিত অভিযোগ দিতে হবে? নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের দায়বদ্ধতা থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

প্রথম আলো: এই দুটো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে এর কী প্রভাব পড়বে?

ধীমান সাহা: নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা আছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভোটারদের নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল করে তোলার চেষ্টা করা যায়। এই নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু না হলে ভোটাররা আরও হতাশ হবেন।

প্রথম আলো: বিএনপি তো নির্বাচনে নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের। ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কেমন দেখছেন?

ধীমান সাহা: অনেকটা একতরফা নির্বাচন। সেখানেও সরকার দলীয় প্রার্থীরা বেপরোয়া।

প্রথম আলো: গোপালদী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চুরির অপবাদে তিনজন শিশুকে মারধরের পর গ্রাম ঘুরিয়ে চুল কেটে দিয়েছিলেন। নির্বাচনে এমন একজন ব্যক্তির প্রার্থী হওয়া কী বার্তা দেয়?

ধীমান সাহা: ক্ষমতায় থাকা কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এ ধরনের প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া মানে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ করা। এ ধরনের মানুষ প্রার্থী হলে শিশু নির্যাতনসহ সমাজের অপরাপর অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.