ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের মন্তব্যে শুক্রবার বিশ্ববাজারে ডলারের দাম কমেছে। সেপ্টেম্বরে নীতি সুদহার কমতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দিলেও স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেননি। তারপরও ডলারের দামে প্রভাব পড়েছে।
ইউরো ও ইয়েনসহ বিশ্বের ছয়টি প্রধান মুদ্রার সাপেক্ষে ডলার ইনডেক্স প্রণয়ন করা হয়। শুক্রবার সেই ডলার শেষে ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৯৭ দশমিক ৫৮–এ। পাওয়েলের বক্তব্যের আগে সূচকটির মান ছিল প্রায় ৯৮ দশমিক ৭০।
ডলারের বিপরীতে ইউরোর মান বেড়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। ফলে প্রতি ইউরোর বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১ দশমিক ১৭৩৯ ডলার। জাপানি ইয়েনের বিপরীতে ডলারের মান হয়েছে ১৪৬ দশমিক ৬২।
মার্কিন শ্রমবাজার সম্পর্কে পাওয়েল বলেন, এখন ভারসাম্যটা অদ্ভুত ধরনের—কর্মী চাহিদা আর সরবরাহ দুটোই কমে গেছে। এতে কর্মসংস্থানের ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। তাঁর সতর্ক বার্তা, এই ঝুঁকি বাস্তব হলে তা খুব দ্রুত সামনে আসতে পারে। ফেডের বার্ষিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের সামনে এ কথা বলেন তিনি।
টরন্টোভিত্তিক প্রতিষ্ঠান করপের প্রধান বাজার কৌশলবিদ কার্ল শামোটা বলেন, বাজার যা আশা করেছিল, পাওয়েলের বার্তা ততটা পূরণ করতে পারেনি। তবে ডলারের দাম পড়ছে, সেপ্টেম্বরে সুদ কমার সম্ভাবনা বাড়ছে আর বাজার আরও শিথিল মুদ্রানীতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুলের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে ১৬–১৭ তারিখে ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতির বৈঠকে সুদহার কমার সম্ভাবনা সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের ধারণা, এই সম্ভাবনা এখন ৯১ শতাংশ। শুক্রবার সকালেই তা ছিল ৭২ শতাংশ। বছরের শেষ নাগাদ মোট ৫৬ ভিত্তি পয়েন্ট সুদ কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, আগে যা ছিল ৪৮ ভিত্তি পয়েন্ট।
নীতি প্রণয়নে শ্রমবাজারের গুরুত্ব
জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাশার চেয়ে কম কর্মসংস্থান হয়েছে। এর পর থেকেই ব্যবসায়ীরা ধারণা করছিলেন, সেপ্টেম্বরে নীতি সুদহার কমার সম্ভাবনা বাড়ছে। শুল্কজনিত মূল্যবৃদ্ধি সীমিত থাকায় সেই ধারণা আরও জোর পায়। তবে উৎপাদক মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হওয়া এবং আগস্টে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে গতি আসায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সতর্কতা ছিল। অর্থাৎ সুদহার নাও কমতে পারে।
এখন শ্রমবাজারের তথ্যই ফেডের নীতিনির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। শামোটা বলেন, পাওয়েল মূলত বলছেন, শ্রমবাজারে বড় পরিবর্তন আসছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কর্মসংস্থানও ফেডের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ফলে এখন কর্মসংস্থান নীতিনির্ধারণে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
তথ্যসূত্র:সিএনবিসি