বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে নানা ধরনের কটূক্তি প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, এসব গালিগালাজ শুনে অখুশি হওয়ার কিছু নেই। যারা এসব করছে, তারা আমাদের সন্তানের বয়সী। ওরা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে, তখন লজ্জিত হবে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত ও ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
দেশ এখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সেনাবাহিনীও নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনী দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে দায়িত্ব পালন করছে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আগে এত দীর্ঘ সময় মাঠে থাকতে হয়নি। তাই সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে, দূরত্ব থাকলে তা দূর করতে হবে। সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনী একটি পেশাদার সংগঠন। মাঠে দায়িত্ব পালনে সেই পেশাদারত্ব দেখাতে হবে। প্রতিশোধমূলক কাজে নিজেদের জড়ানো যাবে না। একজন সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সেনাপ্রধান বলেন, সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারবেন না।
আরেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তাধীন জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে। তবে সেটা কোনোভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘ট্রায়াল’-এর মাধ্যমে নয়।
একজন সেনা কর্মকর্তাকে গড়ে তুলতে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ ব্যয় হয় উল্লেখ করে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, কেউ যাতে অপরাধে জড়াতে না পারেন, সেদিকে আগেভাগেই খেয়াল রাখতে হবে। অপরাধে জড়িয়ে পড়ার পর তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলে সেটা রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় ছাড়া আর কিছু হয় না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়ানো প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ছড়ানো এসব বার্তা দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। সব সময় সতর্ক থাকবেন, যাতে কেউ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে না পারে।
সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, দেশের মানুষ এখন তাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাঁরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাই তাঁদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে এবং বাহিনীর চেইন অব কমান্ড অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।