সুজনের নিয়ন্ত্রণে দলবদলের বাজার!

0
132

উন্মুক্ত দলবদল হওয়ায় লিগ শেষ করে পরের মৌসুমের জন্য দল গোছাতে মাঠে নামে দলগুলো। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) গত মৌসুম থেকে দলবদলের মাঠে এই নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মূলত আবাহনী ক্রিকেটারদের আগে থেকে দলে টানায় বাকি ক্লাবগুলোও সে প্রতিযোগিয় লিপ্ত হয়ে পড়ে। এবার লিগ শেষ করেই ঘর গোছাতে নেমে পড়েছে ডিপিএলের বেশিরভাগ ক্লাব।

মাঠে নেমেই নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্লাব কর্মকর্তাদের। উদীয়মান ক্রিকেটাররা খালেদ মাহমুদ সুজনের অনুমতি ছাড়া দলবদল করতে রাজি হচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাঁদের। ক্রিকেটারদের নানাভাবে ‘ব্লক’ করে রাখা হয়েছে বলে জানান তাঁরা। বিসিবি পরিচালক ও কোচ সুজনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।

আবাহনী লিমিটেড ও শাইনপুকুর স্পোর্টিং ক্লাবের দল গড়েন সুজন। এ বছর লিগ শেষ করার আগে থেকে পরের বছরের জন্য খেলোয়াড় দলে নিয়েছেন তিনি। দলবদল করতে গিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্রিকেটারকে তিনি ‘ব্লক’ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ কয়েকটি ক্লাবের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ক্লাব কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রকাশ্যে বলতে পারি না, শত্রুতা বাড়বে। কারণ যাঁরা বোর্ড চালান, খেলোয়াড়রা তাঁদের কথার বাইরে যেতে পারবে না। যে পাঁচ-ছয়জন ক্রিকেটারকে প্রস্তাব দিয়েছি সবার এককথা, সুজন ভাইয়ের সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু করতে পারব না। তিনি (খালেদ মাহমুদ) হয়তো চাচ্ছেন, আমরা খেলোয়াড়ের জন্য তাঁর কাছে ধরনা দিই।’

খালেদ মাহমুদ সুজন একে ‘ফালতু’ অভিযোগ মনে করেন। তিনি বলেন, ‘আমার শাইনপুকুর দল করা হয়ে গেছে। এ রকম কথা কোনো ক্রিকেটার ক্লাব কর্মকর্তাদের বলে থাকলে তাঁরা নাম বলুক। আসলে আমাদের যাকে প্রয়োজন, তার সঙ্গে কথা পাকা করে সাইন করে ফেলেছি। কাউকে আটকানোর প্রশ্নই ওঠে না।’

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, প্রাইম ব্যাংক নিজেদের বর্তমান দল থেকে কয়েকজন ক্রিকেটারকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে বলে জানান কোচ সোহেল ইসলাম ও মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পরের মৌসুমের জন্য দল গড়তে। তাঁরা কেউই কাড়াকাড়ির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে চান না। অপেক্ষা করে ভারসাম্য একটি দল গড়তে চান তাঁরা।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সও ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। ইরফান শুক্কুর রূপগঞ্জ ছেড়ে শাইনপুকুরে যোগ দিয়েছেন। লুৎফর রহমান বাদল ৩০ লাখ টাকার প্রস্তাব দিয়েও রাখতে পারেনি তাঁকে। এক কর্মকর্তার অভিযোগ বাংলাদেশ টাইগার্সে রাখার লোভ দেখিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁকে। এর সত্যতা যাচাই করার জন্য ইরফানের মোবাইলে কল করা হলে রিসিভ করেননি।

খালেদ মাহমুদ সুজনের মতে, ক্রিকেটাররা যেখানে ভালো সম্মানী পাবে, সেখানেই খেলবে। অনেক ক্লাব তো এক বছরের টাকা দুই বছরেও পরিশোধ করে না। শাইনপুকুর রেলিগেশন লিগে খেললেও খেলোয়াড়দের টাকা পরিশোধ করেছে বোনাসসহ। কারণ, তারা শেষ ম্যাচটি জিতে প্রিমিয়ার লিগে রয়ে গেছে। আবাহনীর কিছু খেলোয়াড় নেওয়া বাকি আছে। আবাহনী-শাইনপুকুর তো খেলোয়াড়দের টাকা দেয়। মোসাদ্দেক তো টাকা ছাড়াই ক্লাবে সাইন করে। কারণ হলো তারা ক্লাব থেকে টাকা পায়। জয়, (মাহমুদুল হাসান), রাকিবুলের অন্য ক্লাব থেকে প্রস্তাব পাওয়ায় আমি ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে সেট করেছি। মোহামেডানের সাব্বির ভাই শেখ জামাল থেকে তো আমার কাছে খেলোয়াড় চান। কেউ সাহায্য চাইলে আমার করতে আপত্তি নেই। কিন্তু আমার অনুমতি ছাড়া কোনো ক্রিকেটারকে দলবদল করতে নিষেধ করিনি।’

একসময় তো দলবদলের আগে খেলোয়াড়দের তুলে নিয়ে যেত অন্য ক্লাব। এখন অন্তত তেমন কিছু হয় না। ক্ষমতাবানরা নানা কৌশলে কিছু সুবিধা হয়তো নিয়ে থাকেন। যেটা মোকাবিলা করতে পারছে না ক্ষমতার বাইরে থাকা ক্লাবগুলো।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.