স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে বেলিংহামের বাইসাইকেল কিকে রক্ষা পেলেও স্বস্তিতে নেই ইংল্যান্ড। আজ সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে চাপে থেকেই মাঠে নামবে তারা। অথচ এই ম্যাচটি কোচ হিসেবে গ্যারেথ সাউথগেটের ১০০তম ম্যাচ। হট ফেভারিট হিসেবে এবার ইউরোতে এসেছিল ইংলিশরা। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি ম্যাচও খেলতে না পারায় এখন চাপে পড়ে গেছে তারা। তাদের প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ডের অবস্থা ঠিক উল্টো। শেষ ষোলোতে শিরোপাধারী ইতালিকে বিদায় করে কোয়ার্টারে আসাটাই তাদের কাছে বিশাল কিছু। সেই অর্জনের আনন্দ নিয়ে আজ ডুসেলডর্ফে তারা ফুরফুরে মেজাজে নামবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
ইংল্যান্ডের তারকারা প্রায় সবাই বিশ্বসেরা ক্লাবে দাপটের সঙ্গে খেলেন। ক্লাবের পক্ষে দারুণ এক মৌসুম কাটিয়ে ছিলেন বলেই তাদের নিয়ে প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় দলে তারা যেন পুরোপুরি অচেনা। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে শুধু একটিতে ৯০ মিনিটের মধ্যে জিততে পেরেছে তারা। ইংল্যান্ড কোচ সাউথগেট আছেন তারকাদের ছন্দে ফেরার প্রত্যাশায়। না হলে শততম ম্যাচেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে তাঁর। এত তারকা থাকার পরও দল ভালো না খেলায় পুরো দায় এসে পড়েছে কোচ সাউথগেটের কাঁধে। তুমুল সমালোচনা চলছে তাঁর। তবে এত সমালোচনার পরও একাদশে পরিবর্তন আনছেন না তিনি। গত চার ম্যাচেই একই একাদশ দিয়ে শুরু করছেন তিনি। তবে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি পরিবর্তন আনতেই হবে তাঁকে। সাসপেনশনের কারণে আজ ডিফেন্ডার মার্ক গুইয়ের বদলে অন্য কাউকে নামাতে হবে। তবে তাঁর বদলে কাকে সুযোগ দেবেন, সেটা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গেছেন কোচ।
কোচ এখন আশায় বুক বাঁধছেন বেলিংহামকে নিয়ে। রিয়ালের হয়ে দারুণ একটি মৌসুম কাটানোয় তরুণ এ মিডফিল্ডারকে ঘিরে ইউরো জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু গ্রুপ পর্বে তিনি পুরাই ফ্লপ। তবে গত ম্যাচে বাইসাইকেল কিকে দারুণ এক গোল করে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুধু বেলিংহামই নন; হ্যারি কেইন, ফিল ফোডেন, শাকা– ইংল্যান্ডের আক্রমণভাগের কেউই ছন্দে নেই। এর মধ্যে কেইন বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে প্রথম মৌসুমে রেকর্ড গোল করে এসেছেন। ফিল ফোডেন সিটিকে লিগ জিতিয়ে প্রিমিয়ার লিগের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন। তারা সবাই একসঙ্গে ছন্দ হারিয়ে বসায় বিপাকে পড়ে গেছেন কোচ সাউথগেট। এ জন্য অনেকেই কোচের প্রতি সহমর্মিতাও দেখাচ্ছেন।
সুইজারল্যান্ডের সামনে প্রথমবারের মতো সেমির হাতছানি। গত আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলাই তাদের সেরা সাফল্য। গত বিশ্বকাপের পর থেকে দারুণ ফর্মে আছে সুইসরা। বিশ্বকাপের পর ১৮ ম্যাচের মধ্যে কেবল ১টি হেরেছে তারা। গ্রুপ পর্বে জার্মানিকে রুখে দিয়ে নকআউটে এসেছে তারা। শেষ ষোলোতে ইতালিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইউরোর অন্যতম সেরা অঘটনের জন্ম দিয়েছেন শাকা-এম্বোলিরা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এবার অত্যন্ত গোছালো ফুটবল খেলছে সুইজারল্যান্ড। গত চার ম্যাচে দলটির গোলরক্ষক ইয়ান সোমেরকে মাত্র ৬টি আক্রমণ সেভ করতে হয়েছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, তাদের রক্ষণ কতটা শক্তিশালী। এই রক্ষণ ভাঙার দুঃসাধ্য কাজটিই আজ করতে হবে কেইন-বেলিংহামদের।