মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সীমান্তচৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফের উত্তেজনা শুরু হয়েছে। রোববার রাতভর গোলাগুলি ও মর্টারশেলের শব্দ শোনা গেছে। সোমবারও থেমে থেমে চলে গোলাগুলি।
এদিকে ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের পাঁচটি স্কুল খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সীমান্তে সংঘর্ষের কারণে এতদিন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে আবার সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তাই দুচিন্তায় রয়েছেন স্থানীয়রা।
সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, রোববার রাত ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি স্থানে থেমে থেমে গোলাগুলি, মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ও ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শোনা গেছে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী, টেকনাফ সদর, হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং ইউনিয়নের সীমান্ত থেকে এসব শব্দ শোনা গেছে বলে জানা গেছে।
সোমবার সকালের পর কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দুপুরে হোয়াইক্যং সীমান্তে আবার গোলাগুলি শুরু হয়। বেলা ৩টা পর্যন্ত ওপারের কুমিরখালী সীমান্তচৌকি ঘিরে সংঘর্ষ হয়।
একই পরিস্থিতি জানিয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েকদিন সীমান্ত পরিস্থিতি ভালো ছিল। এখন আবার উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে। রোববার রাতের পর সোমবারও মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
২ বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যরা তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে অনুপ্রবেশকালে তিন দফায় ৭৯ রোহিঙ্গাকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে এপারে মাঝে–মধ্যে গোলাগুলি ও বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আগামী বুধবার থেকে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা জানাননি তিনি।
প্রসঙ্গত, ৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে নাইক্ষ্যংছড়ির জলপাইতলী গ্রামে একজন বাংলাদেশি নারী এবং একজন রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হন। এরপর ওই দিন থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার বাইশপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।