চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফিলিং স্টেশনগুলোয় গ্যাস নেই। এ কারণে গ্যাসচালিত গাড়িগুলো চলছে না। রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় আজ সোমবার সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ। ডিজেলচালিত গণপরিবহন আসতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। আবার অনেকে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাতে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সতর্কতার অংশ হিসেবে মহেশখালীর ভাসমান দুটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী ও চট্টগ্রামমুখী উভয় লেনে কিছুদূর পরপর যাত্রীদের জটলা দেখা গেছে। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। দীর্ঘ সময় পরপর ডিজেলচালিত দু-একটা গাড়ি এলে জটলায় থাকা যাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। পুরুষ যাত্রীরা চাপাচাপি করে উঠতে পারলেও নারীরা উঠতে পারেন না।
উপজেলার সুলতানা মন্দির এলাকায় কথা হয় শিক্ষার্থী সনি দাসের সঙ্গে। তিনি এক ঘণ্টা ধরে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু কোনো গণপরিবহন আসছে না। এ কারণে সময়মতো ক্লাসে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত তিনি।
উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকায় কথা হয় নূরজাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, তিনি কদমরসুল এলাকায় একটি কার্টন ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। সকাল আটটায় তাঁকে কাজে যোগ দিতে হবে। রাস্তায় গাড়ি কম, বিষয়টি তিনি জানতেন না। প্রতিদিনের মতো রাস্তায় এসে দেখেন গাড়ি নেই। এ কারণের বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে থাকা কর্মস্থলের দিকে তিনি হেঁটে রওনা দিয়েছেন।
ভাটিয়ারি এলাকায় স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ছুটি মিলিয়ে তিন দিন পর কর্মস্থলে যাচ্ছেন। গাড়ি পাবেন না—এমন আশঙ্কায় আগেভাগে বের হয়েছেন তিনি। মহাসড়কে এসে দেখেন গাড়ি তেমন নেই।
কদমরসুল এলাকায় কথা হয় লেগুনাচালক সম্পদ দাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর গাড়ি ডিজেলচালিত হওয়ায় তিনি গাড়ি চালাতে পারছেন। গ্যাসচালিত গাড়িগুলো বন্ধ আছে। ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস না দিলে এ দুর্ভোগ আরও বাড়বে মানুষের।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্যাস না থাকায় মহাসড়কে গণপরিবহন কম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালত খোলা থাকায় মানুষ কিছুটা দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে টার্মিনাল থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা গ্যাসবাহী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মহেশখালীর দিকে রওনা দিয়েছে। সেটি গ্যাস পাইপলাইনে পাঠানো শুরু হলে কম চাপ ব্যবহারকারী গ্রাহক, যেমন আবাসিক এলাকায় গ্যাস দেওয়া শুরু করবেন তাঁরা। কিন্তু ফিলিং স্টেশন বা কারখানাগুলোয় পর্যাপ্ত গ্যাস পেতে আরও সময় লাগবে।