‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আষাঢ়ের এমন দিনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য বললেও সিলেটের নগর জীবনের ব্যস্ত মানুষকে ঘরের বাইরে বের হতে হয়েছে, ছুটতে হয়েছে নিজ নিজ কর্মস্থলে।
আজ বৃহস্পতিবার আষাঢ়ের প্রথম দিনে জলাবদ্ধতা ডিঙিয়ে দুর্ভোগ ঠেলে গন্তব্যে ছুটেছেন সিলেট নগরের বাসিন্দারা। কারণ, জ্যৈষ্ঠের শেষের দিন গতকাল বুধবার থেকে আজ আষাঢ়ের শুরুর দিন সিলেটে ভারী বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটে ২৭১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টা সিলেটে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে।
দুই দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে নগরের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী, ভার্থখলা, সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, পাঠানটুলা, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এসব এলাকার বাসিন্দারা আজ সকালে হাঁটু পানি ডিঙিয়ে গন্তব্যে ছুটেছেন। দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে স্কুলশিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে।
নগরের কদমতলী এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, টানা বৃষ্টি হলেই কদমতলী ও এর আশপাশ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ভবিষ্যতে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
ভারী বৃষ্টিতে সিলেটের নদ-নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সিলেটের সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার এর মধ্যে ৮ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটারে অবস্থান করেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা ১৩ দশমিক শূন্য সেন্টিমিটার এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটারে অবস্থান করে। আর পিয়াইন নদের পানি ১০ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছিল।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, সিলেটে ভারী বৃষ্টির কারণে সাময়িক পানি জমেছে। তবে নালা-নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে পানি নামার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জলাবদ্ধতা বেশি সময় স্থায়ী হচ্ছে না।