সিলেটের সাবেক মেয়রসহ আওয়ামী লীগ–ছাত্রলীগের তিন নেতার বাসায় হামলা, ভাঙচুর

0
53
ভাঙচুর হওয়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকায়

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতার বাসায়ও হামলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে নগরে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিলের পর বিকেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।

একইভাবে শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়’ এবং মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভাঙচুর হওয়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকায়

হামলার পর সরেজমিন দেখা যায়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ির বসার ঘর থেকে শুরু করে প্রায় সব কক্ষের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবের কাচ ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে। অনেক আসবাবপত্র ওলটপালট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আলমারি, চেয়ার-টেবিল, ফ্রিজ, এসিও, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র দাবি করেছে, বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান। অন্তত চারজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তাঁরা হামলায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের অংশ নিতে দেখেছেন।

ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় পরবর্তীতে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ভাঙচুর হওয়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকায়

তবে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী রাত পৌনে নয়টার দিকে  বলেন, ‘আমি শ্রীমঙ্গল ছিলাম। একটু আগে ফিরেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। ছাত্রলীগ এমন ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রদলের ওপর দোষ চাপিয়েছে, এমন নজিরও আছে। তবে বিএনপি কোনো হিংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। যদি এমন হামলা ভাঙচুর হয়, এটা সমর্থনযোগ্য নয়।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ারুজ্জামান ৫ আগস্টের পরপর লন্ডন চলে যান। অন্যদিকে শফিউল আলম চৌধুরী ভারতের কলকাতায় রয়েছেন। এ ছাড়া রুহেলও দেশের বাইরে রয়েছেন।

যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। কে বা কারা এটা করেছে, তা জানার চেষ্টা করছি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.