বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) আক্রমণের মুখে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে গেলেও নিজ বাসভবনেই অবস্থান করছেন তার নিয়োগকৃত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি। বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কসহ পুরো সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলেও তার হাতেই এই মুহূর্তে সিরিয়া সরকারের ভার। এইচটিএসের পক্ষ থেকেও ঘোষণা এসেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত মোহাম্মদ আল-জালালিই সামলাবেন শাসনভার। এদিকে নতুন সিরিয়া গঠনে বিদ্রোহীদের সবরকম সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদেন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের রাজধানী ত্যাগের পর বিবৃতি দেওয়া হয়েছে এইচটিএসের পক্ষ থেকে, যেখানে গোষ্ঠিটির প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেন, দামেস্কের কোনো প্রতিষ্ঠানের দখল নিতে নিষেধ করা হয়েছে বিদ্রোহীদেরকে। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে এসবের ভার। উৎসবের সময় গুলি চালানোও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের মাধ্যমে নতুন সিরিয়ার সূচনা হলো মন্তব্য করে তিনি বলেন, নতুন সিরিয়া হবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জায়গা, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সিরিয়ানদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা হয়েছে। ৫০ বছরের নিপীড়ন এবং ১৩ বছরের অপরাধ, অত্যাচার, বাস্তুচ্যুতি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পর সব দখলদার বাহিনীর মোকাবিলা করে আমরা আজ ঘোষণা করছি, সেই অন্ধকার যুগের সমাপ্তি এবং শুরু। সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের শুরু হলো।
এদিকে নিজ বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। সেইসঙ্গে তিনি জানান, দামেস্ক ছেড়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার এবং তিনি নিশ্চিত করতে চান যে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আল-জালালি বলেন, আমি সবাইকে যুক্তিযুক্তভাবে চিন্তা করার এবং দেশ নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বিরোধীদের দিকে আমাদের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি, যারা আমাদের দিকে তাদের হাত বাড়িয়েছে। দৃঢ়ভাবে বলছি, তারা এই দেশের কারও ক্ষতি করবে না।
বক্তব্যে জনগণকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি।