শিক্ষার্থীকে পিষে দিয়ে পালানোর সময় শিশুকেও চাপা দিল বাস

0
90

রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বাসের চাপায় জাহিদ হাসান (২৪) নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ সময় জনতার ধাওয়া খেয়ে বেপরোয়া গতিতে হাতিরঝিল দিয়ে পালানোর সময় মেহেদী হাসান পারভেজ (১৩) নামে প্রতিবন্ধী শিশুকে পিষে দিয়েছে বাসটি। এ ঘটনায় ওই বাসের চালক আরিফ হোসেনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জাহিদ চীনের নর্থ ইলেকট্রনিক পাওয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা তিন ভাই এক বোন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ভবেরচর গ্রামে। বর্তমানে তিনি পরিবারের সঙ্গে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় থাকতেন।

জাহিদের বড় ভাই ইমরান বলেন, জাহিদ চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। ছুটিতে সে দেশে এসেছে।  বিকেলে একটি কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে রামপুরা এলাকায় ফুড ট্রিট রেস্টুরেন্টের সমানে রাস্তা পারাপারের সময় ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় কোনো মামলা করতে চাই না। আমরা ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছি।

আটক বাসচালক আরিফ হোসেন।

এদিকে নিহত শিশুর মা পারভিন আক্তার শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মিরপুরের কালশীর আদর্শ নগর এলাকায় থাকতেন। রামপুরা হাতিরঝিল এলাকায় মায়ের সঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তি করতে এসে সে নিহত হয়। তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের ডামুডা থানার বালি বাড়ি বৈকান্দি। তার বাবার নাম রিপন মিয়া।

হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক মিনহাজ উদ্দিন জানান, রামপুরা এলাকায় জাহিদ নামের এক শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়ে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় মেহেদীকে চাপা দিলেই ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। মেহেদী তার মা পারভিন আক্তার শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করত। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদে ঢামেক হাসপাতালের মর্গের সামনে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। শিশুটির মামা ফারুক হোসেন বলেন, আমার বোনের তিন ছেলে–মেয়ে। বাসের চাপায় আমার ভাগ্নে মারা গেল। বোনকে কি বুঝ দিবো। দুপুরের পর বাসা থেকে খেয়ে ভালো মানুষ বের হলো। আর বিকালে মৃত্যুর সংবাদ পেলাম। হাসপাতালে গিয়ে দেখি তার নিথর দেহ মর্গে পড়ে আছে। এই হত্যার বিচার চাই।

হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ বলেন, ওই ঘটনায় বাসের চালক আরিফকে আটক করা হয়েছে। জাহিদের পরিবারের পক্ষ থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ হস্তান্তরের আবেদন করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.