‌’সিনেমায় আসার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেছি , এটা মনে করি না’

0
110
অভিনেতা আফরান নিশোর’

‘এবার বড় পর্দায় দেখা মিলবে অভিনেতা আফরান নিশোর’– এ খবর ভক্তদের মধ্যে ততটা সাড়া ফেলল না! কারণ কী? বিস্ময় নিয়েই এই প্রশ্ন উঠে এসেছে সামনে। কারণ, ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই তারকাকে সিনেমায় দেখার আকাঙ্ক্ষা ছিল অনেকের। চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হওয়ার সুযোগও ছিল নিশোর।

প্রস্তাব পেয়েছেন তরুণ থেকে শুরু করে গুণী, আলোচিত নির্মাতাদের কাছ থেকে। একবার নয়, বেশ কয়েকবার। তবু সিনেমা জগতে পা রাখেননি এই অভিনেতা। অবশেষে দুই দশক অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রথম যখন চলচ্চিত্রের জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন, তখন কেন ভক্ত-অনুরাগীরা নিশ্চুপ– এ প্রশ্নের উত্তর খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানা গেল, “আগে বা পরে নিশো সিনেমায় অভিনয় করবেন– এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন ভক্ত-অনুরাগীরা।

তাঁরা এও মনে করেন, ভার্সেটাইল এই অভিনেতা নাটক, টেলিছবি, ওয়েব সিরিজের মতো সিনেমায়ও বাজিমাত করবেন। তাই রায়হান রাফীর ‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হচ্ছে নিশোর”– এই খবর বিস্মিত করেনি তাঁদের। যে জন্য এ নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেননি কেউ। বরং প্রহর গুনছেন কবে মুক্তি পাবে ‘সুড়ঙ্গ’ এবং সেখানে এই অভিনেতাকে কোনো রূপে আবিষ্কার করবেন। এ তো গেল ভক্ত-অনুরাগীর কথা। এখন জানতে চাই, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য আফরান নিশো কেন এতটা সময় নিলেন?

তা জানতে চাইলে এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি মনে করি না, সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সময় নিয়েছি। এটা সত্যি যে, এর আগে যখন সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি, কিন্তু তখন যে বিষয়টা যাচাই করেছি তা হলো, সেই কাজ আমার অভিনেতাসত্তাকে খুশি করবে কিনা? অভিনয়ের সুবাদে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা পুঁজি করে কখনও স্রোতে ভাসতে চাইনি।

অপেক্ষায় থেকেছি, কাঙ্ক্ষিত কাজ, সঠিক সময় ও সুযোগের। অবশেষে এই সময়ে এসে মনে হয়েছে, বড় পর্দায় অভিষেকের এটাই সঠিক সময়।’ অভিষেকের বিষয়টা তো জানা হলো, এখন যে প্রশ্ন সামনে এসে যায় তা হলো, চলচ্চিত্র মাধ্যমে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা কেমন এবং এই মাধ্যমে স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা আছে কিনা– এ প্রশ্নে নিশো বলেন, অভিনয় তো আলাদা নয়, তবে সিনেমায় কাজ করছি– এই ভাবনাটা অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। এটা একেবারে প্রথম সন্তানের পৃথিবীতে আগমনের মতোই অনুভূতি। বহুকাল ধরে শুনে আসছি– প্রথম সবকিছু নিয়েই থাকে অন্যরকম ভালো লাগা, ভয়, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্নবুনন– অনেক কিছু।

এই কথার আবারও উপলব্ধি হলো ‘সুড়ঙ্গ’ ছবির শুটিং শুরুর পর। নির্ভর করছে চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ রূপরেখার ওপর। সিনেমায় অভিনয়ের আগে জরুরি ছিল, আমি কী চাই– এই প্রশ্নের উত্তর জানা।

নিজের চাওয়া; অভিনয়ে ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়টা যত দিন না স্পষ্ট হয়েছে, তত দিন পর্যন্ত সিনেমার বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসিনি। যখন দেখলাম, চলচ্চিত্রের বাঁকবদল হচ্ছে; বদলে যাচ্ছে গল্পের ধরন ও তার উপস্থাপনা, তরুণদের অনেকে বিশ্বে পাল্লা দিয়ে সিনেমা নির্মাণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে, তখনই চলচ্চিত্র জগতে পা রেখেছি। চলচ্চিত্রে এখনকার যে ধারা, সেটা চলমান থাকলে সিনেমায় নিয়মিত হবো।’

তাঁর এই কথায় স্পষ্ট, ভালো কাজের সুযোগ যত দিন থাববে, তত দিন বড় পর্দায় দেখা যাবে। আশার কথা হলো, আমাদের চলচ্চিত্র জগতে নতুন দিনের হাওয়া বইছে। যার সুবাদে আমরা পাচ্ছি চলচ্চিত্রে প্রাণ ফিরে আসার আশ্বাস। তাই ‘সুড়ঙ্গ’ থেকে শুরু করে একে একে আরও অনেক ছবিতে আমরা নিশোর দেখা পাব– এটুকু আশা করতেই পারি। কিন্তু এর পরও যে প্রশ্ন থেকে যায় তা হলো, নাটক, টেলিছবি, ওয়েব সিরিজের দুর্দান্ত এক অভিনেতাকে আর ছোট পর্দায় দেখা যাবে না?

এর উত্তরে নিশো হেসে বলেন, ‘এখনই ভাবনাকে এতদূর প্রসারিত করার কোনো কারণ নেই। সিনেমায় জগতে স্থায়ী হই বা না হই, ছোট পর্দায় অভিনয় করে যাব। অন্তত যত দিন ভালো কাজের সুযোগ থাকছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.