হিরো আলম ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এরপর হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোটের ফলাফলে কারচুপি করে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএমের ভোটের প্রিন্ট কপি ও ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনা চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদনও করেন তিনি। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর সেই আবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেন।
উপনির্বাচনের প্রসঙ্গও টেনে আনেন হিরো আলম। নির্বাচনে দুটি আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন তিনি। হিরো আলম বলেন, ১ ফেব্রুয়ারির উপনির্বাচনে কেন্দ্র দখল এবং জোচ্চুরি করে বগুড়া সদর আসনের ফল ছিনতাই করে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বগুড়া-৪ আসনে ভরাডুবির পরও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে মহাজোটের শরিক দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করার হয়েছে।
হিরো আলম অভিযোগ করেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বগুড়াবাসীকে উন্নয়নের মিথ্যা ফুলঝুরি শুনিয়েছেন। তাঁর কথায় মনে হয়েছিল, বগুড়াকে সিঙ্গাপুর বানাবেন। কিন্তু তিনি এমপি হতে না হতেই বগুড়াবাসীর কাছ থেকে তাদের প্রাণের শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত সরকারি দলের এমপি ও নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। গেল দেড় দশকে বগুড়া উন্নয়ন বঞ্চিত। স্টেডিয়াম চলে গেল, বিমানবন্দরও ঝুলছে। বিভাগ ও সিটি করপোরেশন হয়নি। এখন শুধু বগুড়ার মাটি নিয়ে যাওয়া বাকি আছে।
বগুড়ার মানুষ এসব বঞ্চনা সহ্য করবে না জানিয়ে হিরো আলম বলেন, স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিল করে বীর শহীদ চান্দুর আত্মত্যাগের অমর্যাদা করা হয়েছে। বগুড়ার মানুষ এই বঞ্চনা মুখ বুঝে সহ্য করতে পারে না। যৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে এখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনে বিসিবিকে বাধ্য করা হবে।
জানা যায়, বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে স্টেডিয়ামের মূল মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে স্টেডিয়ামটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গত বৃহস্পতিবার এনএসসি সচিব বরাবর পাঠানো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই দিনই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কর্মরত বিসিবির ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বগুড়া থেকে প্রত্যাহার করে মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। এ ছাড়া স্টেডিয়ামে থাকা রোলার, সুপার সপার, পিচ কাভারসহ মাঠ ও খেলার যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ড্রেসিংরুমের আসবাব ঢাকায় নিয়ে গেছে বিসিবি।
বগুড়ার খেলোয়াড়, দর্শক ও ক্রীড়াসংগঠকসহ সাধারণ মানুষ বিসিবির এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। মো. রুমেল নামে এক যুবক শহরের সাতমাথা এলাকায় তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন প্রতিদিন মানববন্ধন করছেন। সবশেষ বিসিবির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চেয়ে আলোচিত হিরো আলম আজ শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।


















