সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার নিয়োগপ্রক্রিয়া

0
143
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ছবি:সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি পদের নিয়োগপ্রক্রিয়া সাড়ে ৩ বছর ধরে আটকে আছে। আবেদনকারী প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হলেও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না। দীর্ঘদিনেও নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের ১০ মার্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ পদে শুধু নারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ ছিল। যাঁরা নিয়োগের পর ১৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠপর্যায়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, প্রজননস্বাস্থ্যসহ পরিবার পরিকল্পনা, পুষ্টি, সাধারণ রোগীসহ অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার কথা।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দীর্ঘ তিন বছর পর গত ফেব্রুয়ারিতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

সারা দেশে মোট ৪৬টি জেলায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ প্রার্থী। এর মধ্যে ৭ হাজার ৬২১ জন মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হন। কিন্তু লিখিত পরীক্ষা নিয়ে আগের নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এরপর নতুন নিয়োগ কমিটি গঠন করে ২২ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ৫টি ভাইভা বোর্ডের মাধ্যমে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।

দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরেও নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চূড়ান্ত ফলাফলের অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীরা। তাঁরা দ্রুত এই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পরীক্ষার্থী বলেন, ‘সরকারি চাকরির বয়স প্রায় শেষ পর্যায়ে। পদটি শুধু নারী প্রার্থীদের জন্য হওয়ায় ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো ফল না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছি। কবে ফল দেবে, সেটাও কেউ বলতে পারছেন না।’

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের সচিব আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ভাইভার জন্য নতুন কমিটি গঠন করেন। একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে মোট পাঁচটি ভাইভা বোর্ড করা হয়। প্রতিটি বোর্ডে পাঁচজন করে সদস্য থাকেন।

এর মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন সদস্য, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একজন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের দুজন এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের একজন সদস্য ছিলেন। প্রতিদিন প্রতিটি বোর্ড মৌখিক পরীক্ষার আগে নিয়োগ কমিটির নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও পাঁচটি বোর্ডের পাঁচজন বোর্ড সভাপতির উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে রোল নম্বর বণ্টন করে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভাইভা নেন।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের কারণে ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। তাঁরা বিভিন্নভাবে চূড়ান্ত ফল আটকে রাখার চেষ্টা করছেন। মৌখিক পরীক্ষা যেহেতু স্বচ্ছতার সঙ্গে নেওয়া হয়েছে, সেখানে লিখিত পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়েও অনেক প্রার্থী বাদ পড়েছেন। লিখিত পরীক্ষায় অনেকে দুর্নীতি করে পার পেলেও মৌখিক পরীক্ষায় শুধু যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় আলাদা আলাদাভাবে পাস/ফেল নিয়ম থাকায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হতে দুই পরীক্ষাতেই পাস করতে হবে প্রার্থীদের।

আব্দুর রাজ্জাক সরকার

ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.