সালাউদ্দিনে অনাস্থা বাড়ছে

0
137
মো. সালাউদ্দিন

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা বাড়ছে। নির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে পারেন জেলা ও বিভাগীয় সংগঠন পরিষদ থেকে নির্বাচিত সদস্যরা। কাজের সুযোগ না থাকায় মার্চে পদত্যাগ করেছেন নীলফামারী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন। জেলা থেকে নির্বাচিত বাকি তিন সদস্যকেও পদত্যাগ করতে বলা হবে। গতকাল ঢাকায় জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

ফিফার তদন্তে সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলারদের পাশাপাশি বাফুফের অনেক কর্মকর্তাই মনে করেন, সভাপতি সালাউদ্দিনের ছত্রছায়ায় বছরের পর বছর দুর্নীতি করে গেছেন সোহাগ। এই কলঙ্কের দায় নিতে চান না নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। যে কারণে সালাউদ্দিনের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে ফেডারেশনের কমিটি থেকে সরে যেতে চান বলে দাবি জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীরের।

তিনি বলেন, ‘জেলা ও বিভাগের যেসব প্রতিনিধি রয়েছেন, তাঁদের আমরা অফিসিয়ালি পদত্যাগ করতে বলব; সালাউদ্দিনের কমিটিতে যেহেতু জেলা ও বিভাগের ফুটবলের স্বার্থে কথা বলতে দেওয়া হতো না তাঁদের। তৃণমূলের ফুটবলে কোনো ভূমিকা রাখতে পারতেন না। সুতরাং সেখানে থেকে দুর্নীতির দায়ভার নেওয়ার কোনো মানে হয় না। একজন প্রতিনিধি এরই মধ্যে প্রতিবাদস্বরূপ পদত্যাগ করেছেন। আমরা মনে করি, বাকিদেরও একই পথ অনুসরণ করা উচিত, যাতে আর্থিক অনিয়মের কলঙ্কের দাগ না লাগে। আমরা তাঁদের অনুরোধ জানাব, আশা করি আমাদের আহ্বানে সাড়া দেবেন তাঁরা।’

২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হন সালাউদ্দিন। আশা করা হচ্ছিল, সাবেক কিংবদন্তি এ ফুটবলার দেশের ফুটবলকে এশিয়ান মানে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন। অথচ তাঁর অধীনে গত ১৫ বছরে দেশের ফুটবল পিছিয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবল নেই বলা যায়। ঢাকায় লিগ আর টুর্নামেন্ট করেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন ফেডারেশনের কর্মকর্তারা। জেলার ফুটবলের উন্নয়নে কাজের সুযোগ না দেওয়ার প্রতিবাদে ৫ মার্চ বাফুফের নির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন মুন। জেলা থেকে নির্বাচিত বাকি তিন সদস্য হলেন– নোয়াখালী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সেলিম, খুলনা বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল। সোহাগ কেলেঙ্কারির তদন্ত কমিটিতে ছিলেন মহিউদ্দিন। সম্প্রতি সেখান থেকেও পদত্যাগ করেছেন তিনি। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।

বাফুফের নির্বাহী কমিটি ২১ সদস্যের। একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহসভাপতি, চারজন সহসভাপতি ও ১৪ জন সদস্য। মুন পদত্যাগ করায় নির্বাহী কমিটি বর্তমানে ২০ জনে পরিণত হয়েছে। জেলা থেকে নির্বাচিত বাকি তিন সদস্য পদত্যাগ করলেও নির্বাহী কমিটি বহাল থাকবে। বাকিদের নিয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবরের নির্বাচন পর্যন্ত ফেডারেশন চালিয়ে নিতে পারবেন সালাউদ্দিন। তবে নির্বাহী কমিটি থেকে সদস্যদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বিশ্ব ফুটবলে সভাপতির বিরুদ্ধে নেতিবাচক বার্তা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.