সালমান শাহর মৃত্যু: ২৯ বছর পর হত্যা মামলা, এত বছর যা হলো

0
17
সালমান শাহ

অভিনয়, সহজাত আবেগ ও পর্দায় রোমান্টিক অনুভূতির জন্য তিনি আজও ভক্তদের মনে অমর। চলচ্চিত্রে সমান জনপ্রিয়তা ধরে রাখা, নতুন ধারা সৃষ্টি করা—সব মিলিয়ে সালমান শাহ ছিলেন এক যুগান্তকারী নায়ক, যাঁর স্মৃতি এখনো দর্শক ও সহকর্মীদের অন্তরে জীবন্ত। মাত্র চার বছরের অভিনয়জীবনে ঢালিউডে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা নায়ক হিসেবে কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে তাঁর ইহজাগতিক ভ্রমণের ইতি ঘটে। তাঁর মৃত্যু ঘিরে রহস্য কাটেনি—আত্মহত্যা, নাকি হত্যা?

সালমান শাহর মৃত্যুর হত্যা মামলা আদেশ

২৯ বছর আগে চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্তের জন্য রমনা থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর আইনজীবী ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি পিবিআই। এ কারণে চার বছর আগে (২০২১ সাল) পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নারাজি দিয়েছিলেন নীলা চৌধুরী। আদালত সালমান শাহর মায়ের সেই রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করেছেন। একই সঙ্গে এ মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সেই শুক্রবার

চিত্রনায়ক সালমান শাহ তখন থাকতেন ঢাকার নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার ফ্ল্যাটে। শুক্রবার সকালে বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ছেলে ইমনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসেন—দারোয়ান তাঁদের যেতে দেননি। নীলা চৌধুরীর চোখে সেই সকাল এখনো জ্বালা জমিয়ে রেখেছে। তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত বাবাকে জোর করে ওপরে যেতে হয়েছিল।’

একটি ফোনকল

বেলা ১১টায় সেই ফোন—একটি টেলিফোন যে খবরটি দেয়, তা এক মায়ের হৃদয় ছিন্ন করে দেয়। দ্রুত ছেলের ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে পৌঁছে ছেলে সালমান শাহকে বিছানার ওপর দেখতে পান নীলা চৌধুরী। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘খাটের মধ্যে যেদিকে মাথা দেওয়ার কথা, সেদিকে পা। আর যেদিকে পা দেওয়ার কথা, সেদিকে মাথা। পাশেই সামিরার (সালমান শাহর স্ত্রী) এক আত্মীয়র একটি পারলার ছিল। সেই পারলারের কিছু মেয়ে ইমনের হাতে-পায়ে শর্ষের তেল দিচ্ছে। আমি তো ভাবছি ফিট হয়ে গেছে। আমি দেখলাম, আমার ছেলের হাত-পায়ের নখগুলো নীল। তখন আমি আমার হাজব্যান্ডকে বলেছি, আমার ছেলে তো মরে যাচ্ছে।’

ময়নাতদন্তে আত্মহত্যা, তবে…

হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা ঘোষণা করেন, সালমান আর নেই। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ময়নাতদন্তও বলে—আত্মহত্যা। কিন্তু পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে ফাঁকফোকর, চার বছর আগের নারাজি এবং এখন আদালতের নির্দেশ, হত্যা মামলার স্বীকৃতি—সব মিলিয়ে ভক্ত ও পরিবারের মধ্যে রহস্য ও আক্ষেপ বাড়ে।

পরিবারের দাবি: হত্যা মামলা

বরাবরই পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। নীলা চৌধুরীর অভিযোগ ছিল, তাঁরা হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটিকে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। পুলিশ বলেছিল, অপমৃত্যুর মামলা তদন্তের সময় যদি বেরিয়ে আসে যে এটি হত্যাকাণ্ড, তাহলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হত্যা মামলায় মোড় নেবে।

সালমান শাহ
সালমান শাহ, ছবি:সংগৃহীত

আত্মহত্যার ব্যাখ্যায় যা বলেছিলেন সামিরা!

সালমানের মৃত্যুর পর বরাবরই সালমানের পরিবারের অভিযোগের তির ছিল তাঁর স্ত্রী সামিরার দিকে। আর সামিরা বরাবরই এটি অস্বীকার করেছেন। গত বছর সাবেক স্বামী সালমান শাহর মৃত্যু প্রসঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন সামিরা। বেসরকারি টেলিভিশন টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সামিরার দৃঢ় উচ্চারণ—‘আত্মহত্যা যারা করে, তারা তো কিছু বলে করে না…ইট ইজ সুইসাইড।’ নীলা চৌধুরীর অভিযোগের জবাবে সামিরা বলেন, ‘একটা বাসায় একটা বাচ্চা যখন আত্মহত্যা করে, তখন কি তার মা-বাবাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়? তাহলে আমাকে কেন?’

এরপর নিজের যুক্তি তুলে ধরে সামিরা দাবি করেন, সালমান মানসিকভাবে ছিল ‘সুইসাইডাল বাই নেচার’। তাঁর ভাষায়, ‘এর আগে তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে—মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেকর্ডে দুবারের প্রমাণ আছে, আরেকটি ঘটেছিল অন্য এক হাসপাতালে। তিন ঘটনাই আমার বিয়ের আগের। একবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে, একবার আমাকে বিয়ে করাতে, আরেকবার ব্যক্তিগত কারণে।’

আত্মহত্যায় পিবিআইয়ের দৃষ্টিতে পাঁচ কারণ

সালমান শাহর আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করেছে এ মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জানিয়েছিল, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়নি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে প্রথম কারণ, সালমান শাহ ও চিত্রনায়িকা শাবনূরের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা। দ্বিতীয় কারণ, স্ত্রী সামিয়ার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ। তৃতীয় কারণ, মাত্রাধিক আবেগপ্রবণতার কারণে একাধিকবার আত্মঘাতী হওয়ার বা আত্মহত্যার চেষ্টা। চতুর্থ কারণটি হলো মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা, জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেওয়া। নায়ক সালমানের আত্মহত্যার পঞ্চম কারণ হিসেবে পিবিআই উল্লেখ করেছে, সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা। সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের তৎকালীন প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছিলেন, ‘পিবিআইয়ের তদন্তে সালমান শাহকে হত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক কলহ ও মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’

পিবিআইয়ের প্রতিবেদন ও নারাজি আবেদন

২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহর অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঢাকার সিএমএম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৬০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান শাহকে খুন করা হয়নি। তিনি আত্মহত্যা করেন। এ আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণ ছিল। পরে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে চিত্রনায়ক সালমান শাহর ‘অপমৃত্যু’র ঘটনায় করা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন জমা দেওয়া হয়। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে এ আবেদন জমা দেন সালমান শাহর মা নিলুফার চৌধুরী ওরফে নীলা চৌধুরী। আদালতে জমা দেওয়া নারাজি আবেদনে বলা হয়, সালমান শাহর অপমৃত্যুর মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত না করে আসামিপক্ষের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

সালমান শুধু অভিনেতাই ছিলেন না, চলচ্চিত্রে নতুন ধারার প্রবর্তকও ছিলেন। একক কৃতিত্বে সামাজিক-অ্যাকশনধর্মী ও নিটোল প্রেমের ছবির নতুন একটি ধারার সঙ্গে সবাইকে পরিচিত করেছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তাঁর অভিষেক ছিল রাজসিক। তাঁর কারণেই দেশি চলচ্চিত্র নতুন করে ঘুরে দাঁড়ায়। দর্শকেরা আবারও হলমুখী হন। যেসব প্রযোজক ছবিতে লগ্নি করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাঁরা আবারও ব্যবসায় ফিরে আসেন। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন সালমান শাহ।

মা নীলা চৌধুরী ও তাঁর প্রয়াত ছেলে সালমান শাহ
মা নীলা চৌধুরী ও তাঁর প্রয়াত ছেলে সালমান শাহফাইল ছবি

মৃত্যুর আগের দিন

৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। আগের দিন তিনি ‘প্রেম পিয়াসী’ ছবির ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এফডিসিতে ছিল সেই ছবির ডাবিং। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন নায়িকা শাবনূর। খুনসুটি ও আনন্দময় মুহূর্তে যেন অদৃশ্য কিছু অশান্তি অপেক্ষা করছিল।

ডাবিংয়ের দিনে সালমান শাহ তাঁর বাবাকে ফোন করে বলেন তাঁর স্ত্রী সামিরাকে সাউন্ড কমপ্লেক্সে আনার জন্য। ফোন পাওয়ার পরপরই বাবা সামিরাকে সঙ্গে নিয়ে এফডিসিতে পৌঁছান। শ্বশুরের সঙ্গে সাউন্ড কমপ্লেক্সে এসে সামিরা দেখতে পান, সালমান ও শাবনূর ডাবিং রুমে খুনসুটি করছেন। ওই সময়ের বেশ কিছু বিনোদন সাময়িকীতে শাবনূর ও সালমানকে নিয়ে একাধিক লেখালেখি হয়েছে, তাই শাবনূরের সঙ্গে সালমানকে খুনসুটি করতে দেখে রেগে যান সামিরা। সালমানের বাবা চলে যাওয়ার পর সামিরাও দ্রুত গাড়িতে ওঠেন। ‘অবস্থা জটিল’—বিষয়টি বুঝতে পেরে একই গাড়িতে ওঠেন সালমান শাহ ও চিত্রপরিচালক বাদল খন্দকার।

কিন্তু গাড়িতে বসে সালমানের সঙ্গে কথা বলেননি সামিরা। তাঁকে বোঝাতে থাকেন বাদল খন্দকার। গাড়ি এফডিসির গেট পর্যন্ত গেলে সালমান প্রধান ফটকের সামনে নেমে যান। তাঁর সঙ্গে বাদল খন্দকারও নেমে পড়েন। এরপর সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা দেন। এরপর ডাবিং রুমে ফিরে গেলেও সেদিন আর ডাবিং হয়নি। রাত ১১টায় সালমানকে নিউ ইস্কাটন রোডের ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেন বাদল খন্দকার। রাতের ঘটনাগুলো নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছিল, তবে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে তা ধরা পড়েনি। চলচ্চিত্র পরিচালক শাহ আলম জানান, শেষের দিকে সালমান মানসিক চাপে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা এবং প্রযোজকদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ঘাটতি তাঁকে চাপের মধ্যে রেখেছিল। কিছুদিন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সমিতিতে।

সালমান শাহ
সালমান শাহ

ফিরে ফিরে আসেন সালমান

অভিনয়ের মাধ্যমে সালমান শাহ যেমন সবাইকে মোহাবিষ্ট করে রাখতেন, তেমনি অমায়িক ব্যবহারের জন্য পেয়েছিলেন অনেকেরই প্রশংসা। চলচ্চিত্রে সালমানের জনপ্রিয়তা যখন আকাশচুম্বী, ঠিক তখনই মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হয় তাঁকে। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুরো দেশ শোকে আচ্ছন্ন হয়। চলচ্চিত্রজগতের সহকর্মীরাও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না খবরটি। সেদিন রাজধানীর রাস্তায় নামেন ভক্তরা। শোকমিছিল হয়। বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে যায়। মিডিয়ার খবরে শিরোনাম হয়, ‘বাংলা চলচ্চিত্র শূন্য হলো’। এমনকি সালমানের মৃত্যুর পরও এ দেশে যাঁরা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের কাছেও প্রিয় একটি নাম সালমান শাহ।

শুরু থেকে শেষ—সমান জনপ্রিয়

প্রথম ছবি থেকে শুরু করে শেষ ছবিটি পর্যন্ত সমানতালে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন সালমান শাহ। প্রথম ছবিতে মৌসুমীর সঙ্গে জুটি বাঁধলেও পরে শাবনূরের সঙ্গে একটি সফল জুটি গড়ে ওঠে সালমানের। সালমান-শাবনূর জুটির একেকটি ছবি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সোনালি অতীত হয়ে আছে। এ ছাড়া সালমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাবনাজ, শাহনাজ, লিমা, শিল্পী, শ্যামা, সোনিয়া, বৃষ্টি, সাবরিনা ও কাঞ্চি। তিনি বেঁচে থাকবেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘বিক্ষোভ’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘দেনমোহর’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘বিচার হবে’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘জীবন সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আনন্দ অশ্রু’র মতো ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের ভেতর; নিজস্ব অভিনয়গুণে।

২৯ বছর পার হলেও সালমান শাহর মৃত্যু আজও রহস্যময়। শুধু চলচ্চিত্রে নয়, ভক্তদের হৃদয়েও তিনি অমর হয়ে রয়েছেন। ছোট্ট চার বছরের ক্যারিয়ারে বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন ধারার প্রবর্তক হয়েছিলেন তিনি, তরুণ প্রজন্মের চোখে হয়ে উঠেছিলেন ফ্যাশন ও আবেগের প্রতীক। পরিবার, সহকর্মী ও ভক্তদের স্মৃতিতে সালমান এক ছায়ার মতো থাকবেন—যিনি পর্দায় প্রেম ও যন্ত্রণার অনুভূতিকে জীবন্ত করেছিলেন। তিনি বেঁচে আছেন দর্শকের মনে, ছবির প্রতিটি ফ্রেমে। সালমান শাহ শুধু নায়কই ছিলেন না, ছিলেন একসময়ের আবেগ ও স্বপ্নের প্রতীক। আজও তাঁর অনন্য সাফল্য, অভিনয়গুণ ও ব্যক্তিত্ব ভক্তদের অন্তরে অন্তরে বাঁচিয়ে রেখেছে ক্ষণজন্মা নায়ককে।

আইনজীবীর মন্তব্য

আইনজীবী ফারুক আরও বলেন, সালমান শাহর মৃত্যুর দিনই অনেকটা পরিবারের অজান্তে সালমানের বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরীর স্বাক্ষর নিয়ে রমনা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে পুলিশ। সেই মামলার তদন্ত চলছিল। এর মধ্যে ১৯৯৭ সালে রিজভি আহমেদ নামের একজন অন্য এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করেন, সালমান শাহকে হত্যা করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজানো হয়েছে এবং তিনি নিজেও সেই হত্যায় জড়িত ছিলেন। সালমানের বাবা কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে নালিশি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার যাঁরা আসামি, তাঁদের বিরুদ্ধে এখন হত্যা মামলা করা হবে। তাঁরা এখন হত্যা মামলার আসামি। আদালত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে সালমান শাহর মামা চিত্রপরিচালক আলমগীর কুমকুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সালমানের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করার এই আদেশে আমরা খুশি। সালমান আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.