পলাতক ‘ক্যাসিনো সাঈদ’ হঠাৎ প্রকাশ্যে

0
84

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ফ্যালকন হলে গতকাল দুপুর ১টার দিকে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির নিয়মিত সভা। সভার অন্তিম মুহূর্তে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত সাবেক কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ সেখানে ঢুকলেন। আর সভা শেষে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। ২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর তিনি পালিয়ে ছিলেন। তবে সভার আলোচ্যসূচি ছাপিয়ে সাঈদের অংশ সবার মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি করে। প্রায় তিন বছর পর গত ৩০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন তিনি। তবে গতকালই প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন।

আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য জুনিয়র এশিয়া কাপ হকির জন্য খেলোয়াড়দের ট্রেনিং শিডিউল এবং আসন্ন প্রথম বিভাগ হকি লিগ নিয়ে ফেডারেশনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় ওই সভায়। ২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের আগে তিনিই ছিলেন হকি ফেডারেশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। এরপর ২০২০ সালে ফেডারেশনের তৎকালীন সভাপতি এয়ার চিফ মার্শাল মাশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। শোনা গিয়েছিল, তিনি সিঙ্গাপুরে আছেন। তাঁর অবর্তমানে গঠনতন্ত্র অনুসারে যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ এত দিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে গতকাল সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের তালিকায় ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদে স্বাক্ষর করেন সাঈদ।

সাঈদের স্বপদে ফেরা নিয়ে আইনগত কোনো বাধা নেই বলেই সভা শেষে জানিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান। বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তিনি কমিটিতে ঢুকবেন। এ ব্যাপারে যদি কোনো নীতিগত বাধা না থাকে, তাহলে আমার পক্ষ থেকে তো কোনো বাধা নেই। এখানে যাঁরা কমিটির অন্য সদস্য আছেন, সবাই মিলে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে অনুমতি দিয়েছেন। যদি অন্য কোনো বাধা না থাকে, তাহলে তিনি যোগ দেবেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।

শুরুতে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে কথা বলেন মমিনুল হক সাঈদ। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনের চেয়ে, আমার দুই সন্তানের চেয়ে ক্রীড়াঙ্গনকে বেশি ভালোবাসি। আমাকে বাঁচতে দিন। দয়া করে আমাকে মাফ করে দিন। আমাকে সুষ্ঠু জীবন নিয়ে কাজ করতে দিন। আমি তিনটা বছর অনেক কষ্ট করেছি। এ মুহূর্তে মাকে হাসপাতালে রেখে এসেছি। শুধু আমাকে অনুরোধ করা হয়েছে এখানে আসতে। এমন একটা জায়গা থেকে অনুরোধ করা হয় যে না এসে উপায় ছিল না। জানানো হয়েছিল, হকি ফেডারেশনের সভাপতি বসে আছেন। উপস্থিত হতেই হবে। এর জন্য এসেছি। এখানে আসার পর কোনো কিছু বাধাগ্রস্ত হবে না বলেই আমার মনে হয়।’

পুরোনো সাধারণ সম্পাদককে ফিরে পেয়ে খুশি হকি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদ এ আদেল। বিকেলে হকি ফেডারেশন কার্যালয়ে তিনি বলেন, ‘এখনও ফেডারেশনের নামফলকে তাঁর নাম লেখা আছে। চেয়ারও সরানো হয়নি। কোনো প্রজ্ঞাপন হয়নি। এই পদটা তো এনএসসি খালি করার ঘোষণা দেয়নি। সেটা হলে আবারও নির্বাচন হতো। আইনগত কোনো বাধা ছিল না তাঁর ফিরে আসার ক্ষেত্রে। সে ফেরায় আমরা খুশি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মতিঝিল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, মমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে কোনো মুলতবি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই। যেসব মামলা ছিল, হয়তো তিনি সেগুলোতে জামিন নিয়েছেন। জামিন না নিলে তো ওয়ারেন্ট থাকত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.