সাত বছরের সন্তানহীন দম্পতির ঘরে একসঙ্গে চার কন্যা

0
116
আঞ্জুয়ারা বেগমের গর্ভে জন্ম নেওয়া চার শিশু

এক সঙ্গে চার সন্তান জন্ম দিয়েছেন জামালপুরের এক নারী। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে চার কন্যা সন্তান প্রসব করে আঞ্জুয়ারা বেগম। গর্ভকালীন সময়ে পরীক্ষার মাধ্যমে তিনটি শিশুর কথা জানলেও চার কন্যা সন্তান পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্বজনরা।

আঞ্জুয়ারা বেগমের ননদ ছানোয়ারা বেগম বলেন, ‌আমরা আগে আল্ট্রাসনোগ্রাম করেছিলাম। তখন তিন শিশুর কথা জানতে পারি। গর্ভে শিশুদের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বুধবার বিকেলে ক্লিনিকে ভর্তি করি। এরপর ডাক্তার সিজারের সিদ্ধান্ত নেন। সিজারের পর আমরা দেখি চার কন্যা সন্তান। আমরা এখন অনেক খুশি।

অপারেশনের পরই নবজাতকদের পাঠানো হয় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে তাদের বিশেষায়িত সেবাকেন্দ্রে রাখেন চিকিৎসক।

বিয়ের সাত বছর পর একসঙ্গে চার কন্যা সন্তানের বাবা হতে পেরে অত্যন্ত খুশি আতাউর হোসেন বাবু। পেশায় কাঠমিস্ত্রি বাবু মিয়া এই সন্তান লালন-পালনে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা।

সরিষাবাড়ি উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান বাবু বলেন, আমি সাত বছর আগে বিয়ে করি। আমাদের কোনো সন্তান হয় না। আমি অনেক খুশি।

তিনি বলেন, আমি অনেক গরীব। এখন কীভাবে এই মেয়েদের লালন-পালন করবো। সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি। প্রধানমন্ত্রী যদি একটু সহায়তা করতেন তাহলে আমি এই সন্তানদের লালন পালন করতে পারতাম।

বাবু-আঞ্জুয়ারা দম্পত্তির স্বজন মুসলিম উদ্দিন বলেন, আমরা সকলেই খুব খুশি। এখন এই বাচ্চাগুলো লালন-পালন নিয়েই চিন্তায় পড়ে গেলাম।

শিশুদের দাদি জমিলা বেগম বলেন, আমার ছেলের ঘরে সন্তান হয় না। তাই আমি সাত বছর যাবত অনেক আফসোস করেছি। আল্লাহ আমার কোল ভরে দিয়েছে। আমি অনেক খুশি। এখন কাকে ছেড়ে কাকে কোলে নেব। সেটাই বুঝতে পারছি না।

সাজু-দুলেনা দম্পতির কোলে আরও তিন সন্তান

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে আরও চারটি শিশুর জন্ম দিয়েছে দুলেনা নামে এক গৃহবধূ। তিন কন্যা সন্তান স্বাভাবিক থাকলেও মারা যায় একটি ছেলে সন্তান। আগের পাঁচটিসহ মোট ৮ সন্তানের বাবা হতে পেরে আনন্দে আত্মহারা বাবা সাজু মিয়া।

ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ার চর মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সাজু মিয়া বলেন, আমার ৫টি সন্তান রয়েছে। আজ আরও ৩টি সন্তানের বাবা হলাম। মোট ৮ সন্তানের বাবা হলাম। আমি আমার আনন্দ বলে বোঝাতে পারবো না।

একসঙ্গে দুই গৃহবধূ আট সন্তান জন্ম দেওয়ায় হাসপাতাল চত্বরে শিশুদের স্বজনদের মাঝে দেখা গেছে খুশির আমেজ। শিশুদের দেখতে হাসপাতালে ভিড় করছেন অনেকেই।

তবে চিকিৎসক বলছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়ায় শিশুদের ওজন কম রয়েছে। এ নিয়ে কিছুটা ঝুঁকিতে রয়েছে তারা।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রসন দেবনাথ বলেন, হাসপাতালে থাকা প্রতিটি শিশুই নির্ধারিত সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করেছে। প্রত্যেকের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম। সাধারণত যেসব শিশুর ওজন একটু কম তাদের কিছুটা ঝুঁকি থাকেই। আমরা আমাদের সাধ্যমতো এসব শিশুদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স শিউলি খানম বলেন, আমি ১০ বছর ধরে প্রসূতি ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছি। এর আগে কখনও একই দিনে দুই নারীর ৮ সন্তান প্রসবের ঘটনা দেখিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.