ব্লেয়ার এই যুদ্ধের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আপনি বলতে পারেন আমরা একজন স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছি।’
ইরাক বডি কাউন্ট প্রজেক্ট বলেছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইরাকে ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ২০১১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে ইরাক অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। দেশটিতে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ইরাকের উত্তরাঞ্চল জঙ্গি দল আইএসের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
৯/১১–এর হামলার সঙ্গে সাদ্দাম হোসেনের যোগসাজশ ছিল না। তবে যুদ্ধের পক্ষে সাফাই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দাবি করে, সাদ্দাম গণবিধ্বংসী অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছেন। পরে অবশ্য তাদের দাবি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। হামলার আগে ব্লেয়ার বারবারই বলেছিলেন, ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। দেশটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এসব যুক্তি দেওয়ার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে ব্লেয়ার বলেন, ‘ইউক্রেন এমন একটি দেশ যেখানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রয়েছেন। আমার জানামতে ইউক্রেনে কখনো আঞ্চলিক সংঘাত হয়নি। দেশটি প্রতিবেশী দেশের ওপর হামলাও চালায়নি।’
ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তাঁর উত্তরসূরি পিয়োতর পরোশেঙ্কো এরপর দনবাসে রাশিয়া সমর্থিতদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করেন। রুশ তদন্তকারীরা বলছেন, এতে ২ হাজার ৬০০–এর বেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৫০০ জনের বেশি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলছেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে এই সহিংস ঘটনার ভূমিকা ছিল। গত মাসে রাশিয়ার পার্লামেন্টে পুতিন বলেন, ‘হুমকি দিন দিন বাড়ছিল। আমরা যেসব তথ্য পাচ্ছিলাম তাতে এটা সন্দেহাতীত ছিল যে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে দনবাসে আরেকটি রক্তাক্ত ঘটনা ঘটানো হবে।’
দনবাসের হুমকি ছাড়াও ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পেছনে আরও একটি কারণের কথা বলছেন পুতিন। আর সেটি হলো, ইউক্রেনে ন্যাটোর অব্যাহতভাবে অস্ত্রের জোগান। ইউক্রেনকে ন্যাটো রাশিয়াবিরোধী রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা চুক্তি এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। ইউক্রেনে নব্য নাৎসি মতবাদও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।