সাকিবদের হাতে ধবলধোলাই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

0
240
জয়ের পর হাত মেলাচ্ছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা

তাড়া করতে নেমে শুরুতেই অভিষিক্ত তানভীর ইসলামের জোরের ওপর করা বাঁহাতি স্পিন কবজির মোচড়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন ডেভিড ম্যালান। আট ছুঁই ছুঁই রান রেটের ম্যাচে বাংলাদেশ দলের বোলারদের শুরু থেকেই চাপে রাখার বার্তাই ছিল সেটি। তবে সে ওভারে ফিল সল্টকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তানভীর। তাসকিন আহমেদের করা পরের ওভারেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারির এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন ম্যালান। কিন্তু রিভিউ নিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে যান এই বাঁহাতি।

৭৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন লিটন

৭৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন লিটন

এরপর অবশ্য রানের গতি কমেনি। জস বাটলারকে নিয়ে ম্যালান পাওয়ারপ্লেতে ৪৭ রান যোগ করেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজন মিলে যোগ করেন ৯৫ রান। ম্যালান ৪৭ বল খেলে ৫৩ রানের ‘অ্যাংকর’ ইনিংস খেলেন ১১২ স্ট্রাইক রেটে। ইনিংসের ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে কট বিহাইন্ড হন তিনি, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজের ১০০তম টি-টোয়েন্টি ছিল সেটি।

ইংল্যান্ডের রান তখন ২ উইকেটে ১০০। আর কোনো রান যোগ করার আগেই ইংল্যান্ড হারায় আরেক থিতু ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে। ৩১ বল খেলে ৪০ রান করা বাটলারকে ঠিক পরের বলেই রানআউট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রতিপক্ষ দলের সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাটসম্যানের বিদায় জাগিয়ে তোলে মিরপুর স্টেডিয়ামকে। সহজ জয়ের পথে এগোতে থাকা ইংল্যান্ড জোড়া উইকেট হারিয়ে উল্টো চাপের মুখে পড়ে।

তাসকিন আহমেদ এসে কাজটা আরও কঠিন করে তোলেন। ১৭তম ওভারে তাসকিনের লেংথ বলে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ তোলেন মঈন আলী। স্থায়ী হয়নি বেন ডাকেটের ইনিংস। একই ওভারে তাসকিনের ইয়র্কার উপড়ে ফেলে এই বাঁহাতির স্টাম্প। পরের ওভারে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন আরেক বাঁহাতি স্যাম কারেন। এরপর বেশি দূর এগোয়নি ইংল্যান্ডের ইনিংস।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের ২৭ রান দরকার ছিল। হাসান মাহমুদের করা সে ওভারে ক্রিস ওকস দুটি চার মেরে কিছুটা রোমাঞ্চের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু পরের বলগুলোয় তেমন কিছু করতে পারেননি ওকস ও ক্রিস জর্ডান। তাতে ইংল্যান্ডের ইনিংস থামে ১৪২ রানে। বাংলাদেশ দলের বোলারদের মধ্যে তাসকিন ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিয়েছেন। তবে ৪ ওভারে ১৪ রান নিয়ে ১ উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজ ছিল দুর্দান্ত।

বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ

বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ

টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছে রান তাড়া করে। ইংল্যান্ডকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে বাংলাদেশ দল বোলিং দিয়ে ম্যাচ জয়ের মঞ্চ তৈরি করেছে আগের দুটি ম্যাচে। আজ টসে হেরে সে সুযোগ হাতছাড়া হয়। জস বাটলার টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। আর মিরপুরের ব্যবহৃত উইকেটে বাংলাদেশ দল ব্যাটিং করল রয়েসয়ে। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকার পাওয়ারপ্লেতে ৪৬ রান যোগ করেন। ১৬ বলে ১৯ রান করলেও লিটন খেলেছেন ওয়ানডে মেজাজে (২০ বলে ২১)।

রনি সে শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি। ২২ বলে ২৪ রান করে আলিদ রশিদের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে রিটার্ন ক্যাচ দেন। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার রশিদের শিকার হলেন রনি। লিটন অবশ্য ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেনকে নিয়ে মাঝের ওভারে রানের চাকা সচল রাখেন। দুজন মিলে ৫৮ বলে ৮৪ রান যোগ করেন। রান–খরায় থাকা লিটন এর মধ্যে ফিফটি করেন ৪১ বলে, ৮টি চার ছিল লিটনের ইনিংসে।

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকদের একাংশ

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকদের একাংশ
ছবি: শামসুল হক

সেটিকে তিনি নিয়ে যান তাঁর ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি স্কোরে। ক্রিস জর্ডানের করা ১৭তম ওভারে ৫৭ বল খেলে ৭৩ রান করে আউট হন লিটন, ১২৮ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ১টি ছক্কা।

লিটনের ইনিংসটি ছিল তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মন্থরতম ফিফটি। সেই তুলনায় কিছুটা দ্রুতপ্রিয় ছিলেন নাজমুল। ৩৬ বল খেলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৭ রান করেন নাজমুল। তাঁর ১৩০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি বাংলাদেশকে ২ উইকেটে ১৫৮ রানে পৌঁছে দেয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.