ঈদে হেভিওয়েট সব ছবির ভিড়ে মুক্তি পেল ‘লাল শাড়ি’। কোনো আশঙ্কা ছিল কি?
শুরুতে সবাই বলছিল, এত বড় বড় ছবির মধ্যে আসার কী দরকার। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, সিনেমা বড় না ছোট, তা উপস্থাপনের ওপর নির্ভর করে। সেই জায়গা থেকে একটা ছবিকে আমি সব ধরনের কম্পিটিশনের একদম ঊর্ধ্বে রাখব। যেমন ‘প্রিয়তমা’ এত বড়মাপের ছবি যে সেটার সঙ্গে তুলনা করতে চাই না। একজন প্রযোজক বা শিল্পী হিসেবে আমার চাওয়া, ছবিটি ব্লকবাস্টার হোক। মনে হচ্ছে, সেই পথে হাঁটছে। তবে বাকি যে সিনেমাগুলো আছে, সেগুলোকে আমরা একে অপরে যদি উৎসাহ না দিই, ভয় পাই, পিছিয়ে যাই—তাহলে তো হবে না। সবাইকে আগে সুস্থ প্রতিযোগিতায় আসতে হবে, তবেই আমাদের চলচ্চিত্র এগিয়ে যাবে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, ঈদের সময় সিনেমা নিয়ে সবারই একটা উন্মাদনা থাকে। তাই চেয়েছি, ঈদের মতো উৎসবে ছবিটি মুক্তি পাক। এবারের ঈদে যদিও বৃষ্টি কিছুটা ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, এরপরও দর্শকের উচ্ছ্বাস থামাতে পারেনি।
‘লাল শাড়ি’ আপনার প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র। সরকারি অনুদানের এই ছবিটি নিয়ে শুরু থেকে আপনার কতটা আত্মবিশ্বাস ছিল?
আমি বরাবরই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কিন্তু শতভাগ ছিলাম না। আমার বিশ্বাস ছিল, দর্শকেরা সব সময়ের মতো আমাকে সাপোর্ট দেবেন, ভালোবাসা দেবেন। যে পরিস্থিতিতে যেভাবে তাঁদের কাছে গিয়েছি, ভালোবাসা পেয়েছি। সবাই প্রতিটা মুহূর্তে সুন্দরভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন। মুক্তির পর যেভাবে দর্শকের সাপোর্ট পাচ্ছি, তাতে নিজেকে সৌভাগ্যবতী বলব।
ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবির মধ্যে কোনটি দেখার আগ্রহ আছে?
‘লাল শাড়ি’র হল ভিজিটে লায়ন সিনেমা হলে গিয়ে প্রিয়তমা ছবিটি দর্শক আসনে বসে দেখেছি। পুরো ছবিটি দেখতে পারিনি, তবে যতক্ষণ দেখেছি, তাতেই মুগ্ধ। ভাবছি, কয়েক দিনের মধ্যে আবার প্রিয়তমা দেখতে যাব।
মুক্তির দ্বিতীয় দিনে ‘লাল শাড়ি’র প্রচারণায় শাকিবও খান যুক্ত হয়েছেন। এটা কতটা কাজে এসেছে?
শাকিব খান বাংলাদেশের একজন আইকন। তাঁর অবস্থান থেকে ‘লাল শাড়ি’ ছবির সাপোর্ট পাওয়াটা আসলেই সৌভাগ্যের। পাশাপাশি এটাও বলব, ‘লাল শাড়ি’ ছবিতে শুধু যে আমি আছি তা–ও না, বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ একজন প্রযোজকও আছে, যার নাম আব্রাহাম খান জয়, তাঁরই বাবা শাকিব খান। সন্তানকে শাকিব খান সাপোর্ট দিয়েছেন—এটা অনেক বেশি কাজে দিয়েছে। শনিবার বিকেলে লায়ন্স প্রেক্ষাগৃহে গিয়েও এটা উপলব্ধি করেছি। শাকিব খানের ভক্তরা তো এমনও বলেছেন, শাকিব-অপুকে এক স্ক্রিনে দেখতে চান। তাঁদের আত্মতৃপ্তিটা এভাবেই হয়েছে, শাকিব-অপুকে আমরা এক ছবিতে পাইনি, কিন্তু একই রকম প্রচারণায় তো পেয়েছি—এটাতে তাঁদের বাড়তি আনন্দ কাজ করেছে। বিষয়টি এমন হয়ে গেছে, ‘প্রিয়তমা’ তাঁরা দেখবেন, পাশাপাশি ‘লাল শাড়ি’ও দেখবেন।
সবাই নাহয় বলছেন শাকিব–অপুকে একসঙ্গে পর্দায় দেখতে চান। আপনি কি চান?
ওরে বাবা, প্রতিবারই একই কথা বলব—তাঁর মতো একজন নায়ককে আমার প্রযোজিত ছবিতে নেওয়ার সাহস এখনো হয়নি। তবে সর্বকনিষ্ঠ প্রযোজক জয় যদি কোনো দিন চায়, তাহলে হতেও পারে। সেটা প্রযোজক আর সুপারস্টার শাকিব খানের ভেতরকার আলোচনা। এটাও বলে রাখি, এই সর্বকনিষ্ঠ প্রযোজক চাইলে শাকিব-অপুকে নিয়ে অনেক কিছুই সম্ভব।
পর্দার প্রিয়তমা ইধিকা পালকে কেমন লেগেছে?
কলকাতার টিভি সিরিয়ালের একজন অভিনেত্রী শাকিব খানের প্রিয়তমা হয়েছেন। এই ছবির মাধ্যমে তাঁর যে অবস্থান শাকিব খান দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন, আমার মনে হয় ওই নায়িকা প্রচণ্ড সৌভাগ্যবতী। জীবনে প্রথম ছবি, তা–ও আবার কোরবানির ঈদের মতো উৎসবে আর বিপরীতে নায়ক শাকিব খান। সত্যিই ভাগ্যবান। আমি তো ‘ও প্রিয়তমা’ গানে শাকিবের সঙ্গে ইধিকার কেমিস্ট্রি দেখে ফ্যান হয়ে গেছি। খুবই সুন্দর একটা মেয়ে, লম্বাও বেশ। শাকিবের এত সিনেমার নায়িকা আমি, তারপরও শাকিব খানের প্রিয়তমা হিসেবে ইধিকাকে পারফেক্ট মনে হয়েছে।
আপনার অভিনীত প্রথম ওয়েব ফিল্ম ‘ছায়াবাজি’ ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে। দেখেছেন?
দেখেছি। সবার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। আমি ওয়েবে কাজ করতে আরও বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি। এরই মধ্যে কয়েকটি প্রস্তাবও এসেছে। দুটিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত মানসিকভাবে নিয়েছি। সময় হোক, তাহলেই জানাতে পারব।