সরকারের উৎসাহ সত্ত্বেও জাপানি বাবারা পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে কেন ভয় পায়?

0
113
শিশু জন্মহারের দিক থেকে জাপান সর্বনিম্নের তালিকায় অন্যতম।

জাপানে দীর্ঘ কর্মঘণ্টার ফলে কর্মজীবী বাবারা শুধু যে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো থেকে বঞ্চিত হন এবং মায়েরা ক্যারিয়ার গড়া থেকে-তা ই নয়; সেই সঙ্গে শিশু জন্মহারের দিক থেকে জাপান সর্বনিম্নের তালিকায় অন্যতম। তাই জাপানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই ‘ইকুমেন’ বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। এর লক্ষ্য দেশটিতে জন্মহার বাড়ানো ও পিতার পক্ষ থেকে পরিবারকে বেশি সময় দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে পিতৃত্বকালীন ছুটিতে উদ্বুদ্ধ করতে বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছে জাপান সরকার। তারপরও জাপানি বাবারা পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে ভয় পাচ্ছেন।

জাপানি ‘ইকুমেন’ বলতে-পার্কে সারি সারি গাছে শরতের হলুদ পাতা, তারই মধ্য দিয়ে নিজের ছোট্ট সন্তানকে কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন বাবা এই অতি পরিচিত দৃশ্যটিকেই বোঝে। জাপানি শব্দ ইকুজি (বাচ্চাদের যত্ন) ও ইকেমেন (সুদর্শন পুরুষ) মিলে তৈরি হয়েছে এই পরিভাষাটি।

জাপান সরকারের নতুন নীতি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ কর্মীকে পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হবে। বর্তমানে দেশটিতে পিতৃত্বকালীন ছুটি পান ১৪ শতাংশ পুরুষ কর্মী। ২০৩০ সাল নাগাদ এই ছুটি ৮৫ শতাংশ কর্মীকে দিতে চায় সরকার।

কিন্তু দেশটিতে জন্মহার যেভাবে কমছে ও বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সরকারের পরিকল্পনা ঠিকভাবে কাজ করা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

তরুণ শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা শ্রমিক ইউনিয়ন পিওএসএসসির সদস্য মাকোতো ইয়াহাসি বলেন, সরকার ভালো উদ্দেশ্যে এই নীতিমালা করলেও জাপানি পুরুষদের অনেকেই পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে ভয় পান। নিয়োগকর্তাদের কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে, সে ভয়ে তারা ছুটি নিতে চান না।

২০২১ সালে জাপানের পার্লামেন্টে পাস হওয়া এক আইন অনুযায়ী, চার সপ্তাহ পর্যন্ত পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে পারেন কর্মীরা। কিন্তু আইন থাকলেও অনেকেই পদোন্নতি আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় ছুটি নেন না।

ইয়াহাসি বলেন, কে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিচ্ছেন আর কে নিচ্ছেন না, এ ধরনের বৈষম্য জাপানি আইনে অবৈধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.