সরকারি চিনিকলের উৎপাদন তলানিতে

0
83
চিনি

বাজারে এখন প্রতিকেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকার বেশি দরে। অনেক খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে পর্যাপ্ত চিনি নেই। দেশে চিনির চাহিদা ও দাম বাড়লেও সরকারি চিনিকলগুলোর উৎপাদন প্রতি বছরই কমে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে মাত্র ২১ হাজার ৩১৩ টন চিনি উৎপাদন হয়েছে, যা গত ২৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) তথ্যমতে, সরকারি চিনিকলগুলোতে সর্বোচ্চ এক লাখ ২৮ হাজার লাখ টন চিনি উৎপাদন হয় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে। ওই সময় ১৫টি চিনিকল উৎপাদনে ছিল। পরে লোকসানে থাকায় ২০২০ সালে ছয়টি চিনিকল বন্ধ করা হয়। উৎপাদনের পরিমাণ প্রতিবছরই কমছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৫০৯ টন চিনি উৎপাদন হয়। এখন উৎপাদন আরও তলানিতে নেমেছে। চলতি অর্থবছরে গত অর্থবছরের চেয়েও উৎপাদন কম হয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন তুলনামূলক বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষক আখ চাষে বিমুখ হচ্ছেন। তাই আখের অভাবে চিনিকলগুলোতে নির্ধারিত সময়ের আগেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

বিএসএফআইসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জিল বাংলা সুগার মিলে ৬৮ হাজার টন আখ মাড়াই করে চার হাজার ৭৬০ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সে জন্য ৬০ দিন আখ মাড়াইয়ের কথা ছিল। গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে আখ মাড়াই শুরু হয়। কিন্তু ৪১ দিন আখ মাড়াইয়ের পর গত ১২ জানুয়ারি কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় ৩৫ হাজার ১৭১ টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৩২২ টন। একইভাবে অন্য মিলেও আখের অভাবে উৎপাদন কমে গেছে।

আখ চাষে কৃষকের আগ্রহ কমার ফলে কমে গেছে আখ চাষের আওতায় থাকা জমি ও উৎপাদনের পরিমাণও। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২২ অনুযায়ী, ১৯৯০-৯১ অর্থবছরে আখ উৎপাদন হয় ৭৬ লাখ ৮২ হাজার টন। ২০০০-২১ অর্থবছরে যা কমে দাঁড়ায় ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার টনে। একই সময়ে আখ চাষাবাদের জমির পরিমাণও কমেছে অর্ধেকের বেশি। ১৯৯০-৯১ অর্থবছরে ৪ লাখ ৭২ হাজার একর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা কমে হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার একর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.