বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগে জার্মান বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে জার্মানির হামবুর্গের অ্যাংলো-জার্মান ক্লাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ: সাসটেইনেবলিটি অব সীফুড সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স’ শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানির মিনিস্টার (কমার্শিয়াল) মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, হামবুর্গে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ওয়াল্টার স্কট, বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্লু ইকোনমি সেলের প্রধান (যুগ্মসচিব) ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, জার্মান ফিস প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ম্যাথিয়াস কেলার, গ্লোবাল গ্যাপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান মোলার, জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের কান্ট্রি কমিটির চেয়ারম্যান থমাস কনিং, জার্মান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি আব্বাস আলী চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান।
সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, জার্মানি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ। এ দেশের প্রযুক্তি, নীতি, গবেষণা কার্যক্রম বেশ সমৃদ্ধ। মৎস্য খাতে জার্মানি ও বাংলাদেশের একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ খাতে দুই দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পারস্পারিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ দেশ উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ সমুদ্র সম্পদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মাধ্যমে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন আমাদের গবেষণার ক্ষেত্র, সম্পদের ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত। সমুদ্র অঞ্চলে আমাদের খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই। ফলে আমরা সবসময় এ বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উন্নত দেশকে সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা, বিনিয়োগ ও একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।
জার্মান বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। দুই দেশ মৎস্য খাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। মৎস্য খাতে জার্মান বিনিয়োগকারীদের গবেষণা, অভিজ্ঞতা, মৎস্যের মাননিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বাংলাদেশের কাজে লাগবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও সরকারের বিনিয়োগ উপযোগী নীতি রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প স্থাপন ও আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধাসহ সরকার সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। রপ্তানির আগে প্রতিটি মাছ এখন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। বাংলাদেশের মাছের মান নিয়ে এখন আর বিদেশিদের অভিযোগ নেই। কারণ নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশ কোনো আপোষ করে না।