ধান কাটার উৎসবে আওয়ামী লীগ

অমরেশ রায়

0
95
নাটোরের সিংড়ার চলনবিলে এক নারীর জমির পাকা ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

সারাদেশে ধান কাটার উৎসবে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। গ্রামে গ্রামে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনার এই সফল বাস্তবায়নে হাসি ফুটেছে অনেক কৃষকের মুখে।

ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো নেতাকর্মীকে গ্রামের বাড়িতে কৃষকের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯ এপ্রিল দলীয় ফোরামের এক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এমন নির্দেশ দেন তিনি। এর পরই সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী ধান কাটা উৎসবে যোগ দেন। কোথাও কোথাও ধান মাড়াই করে কৃষকের গোলায় তুলে দিচ্ছেন তাঁরা।

এবার দেশে ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পাশাপাশি ঝড়-ঝঞ্ঝার আশঙ্কায় বিভিন্ন অঞ্চলে আগাম ধান কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। তবে কৃষককে ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার গ্রামীণ শ্রমিকরা শহরমুখী হওয়ায় গত কয়েক বছরের মতো এবারও ধান কাটার শ্রমিক সংকট আছে। তীব্র গরমের কারণেও কৃষকদের দুর্ভোগের মাত্রা বেশ বেড়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় কৃষকদের সহযোগিতা করতে নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এর পর কৃষক লীগ নেতাকর্মী নিজ নিজ এলাকার কৃষকের পাকা ধান কেটে ঝাড়াই-মাড়াই শেষে গোলায় তুলে দিতে প্রতিটি ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সংগঠনের সভাপতি সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি। সমীর চন্দ নিজেও ধান কাটার উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের উদ্যোগে করিমগঞ্জে গেরাজুরের হাওরের কৃষক রমজান মিয়ার এক একর জমির বোরো ধান কেটে ও ঝাড়াই-মাড়াই করে গোলায় তুলে দেওয়ার কার্যক্রমে যোগ দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সমীর চন্দ বলেছেন, সারাদেশের নেতাকর্মী কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কেটে ঝাড়াই-মাড়াই শেষে গোলায় তুলে দেওয়ায় কৃষকদের বেশ উপকার হচ্ছে।

একই রকম নির্দেশনা ছিল যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলেরও। সম্প্রতি তাঁরাও সারাদেশে সংগঠনের শাখাগুলোকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নিখিল জানান, সারাদেশে যুবলীগ নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে কৃষকের পাশে থেকে ধান কেটে দিচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীও ধান কাটতে মাঠে নেমেছেন। এরই মধ্যে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়ল বিলে কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার আয়োজনে অংশ নিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু জানান, ধান কাটার মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই তৎপরতায় যুক্ত থাকবেন তাঁরা।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীও যুক্ত হয়েছেন ধান কাটার উৎসবে। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে ছাত্র ও যুবসমাজকে নিয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান সংগঠনের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। ইনান বলেন, এই আহ্বানে সারাদেশেই ব্যাপক সাড়া মিলছে।

এর আগে করোনাকালে কৃষকদের ধান কেটে গোলায় তুলে দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী। একই সঙ্গে করোনা আক্রান্তদের অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্স, ওষুধসহ চিকিৎসাসেবা এবং লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষের কাছে খাবার ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন তাঁরা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, কেবল কৃষকের ধান কাটা উৎসবই নয়, অতীতে যে কোনো দুর্যোগে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার শিক্ষা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.