সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ বছরে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন দেড় শতাধিক পরিবার

0
7
সড়ক দুর্ঘটনা
সড়ক দুর্ঘটনায় গত পাঁচ বছর ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। তাদের প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়-মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
 
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
 
এতে বলা হয়, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মোটরবাইক, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে একসাথে পুরো পরিবার বা এক পরিবারের অধিক সদস্য নিহতের প্রবণতা বাড়ছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা যায়- গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
 
মোটরবাইক দুর্ঘটনা: মোটরবাইক আরোহী হিসেবে স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১২৩টি এবং পিতা-পুত্র নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৮৪টি। অর্থাৎ ১২৩টি বাইক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪৬ জন এবং ৮৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ১৬৮ জন।
 
অটোরিকশা দুর্ঘটনা: অটোরিকশা যাত্রী হিসেবে স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৩৭টি। ৩ জন নিহতের ঘটনা ৭৮টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ৬২টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ৩৮টি, ৬ জন নিহতের ঘটনা ২৬টি এবং ৭ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। মোট ৩৫২টি পরিবারের ১১৭৯ জন নিহত হয়েছে।
 
মাইক্রোবাস দুর্ঘটনা: মাইক্রোবাসের আরোহী হিসেবে একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি, ৩ জন নিহতের ঘটনা ২২টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ১৭টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ১১টি, ৬ জন নিহতের ঘটনা ৮টি এবং ১১ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ৭৫টি পরিবারের ২৮০ জন নিহত।
 
প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা: প্রাইভেটকার আরোহী হিসেবে একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। ৩ জন নিহতের ঘটনা ২১টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ১৭টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ১৪টি। মোট ৭৬টি পরিবারের ২৪৯ জন নিহত।
 
অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনা: অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে ৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৯টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ৫টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ৩টি, ৮ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ১৮টি পরিবারের ৭০ জন নিহত।
 
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— সড়ক অবকাঠামো বিস্তৃত হওয়ায় পরিবারের সকলে একসাথে বেড়াতে বা কোনো কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া; মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল; অধিকাংশ মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্সের ফিটনেস না থাকা; মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অদক্ষতা ও বিশ্রামহীন ড্রাইভিং করা; ট্রাফিক আইন না মেনে বেপরোয়া মোটরযান চালানো।
 
সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— মোটরবাইক আরোহীদের ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করা; ট্রাফিক আইন মেনে মোটরযান চালানো; মহাসড়কে রোড ডিভাইডার ও সার্ভিস রোড নির্মাণ করা; সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেব সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চলাচল নজরদারি করা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.