সচিবালয় অভিমুখে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে সচিবালয়সংলগ্ন আবদুল গণি রোডের জিরো পয়েন্ট মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনসহ ১৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ ছিল গণতন্ত্র মঞ্চের সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচি।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। এ সময় তিনি গণতন্ত্র মঞ্চের আগামী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। আগামী ১৯ থেকে ২১ জুলাই এই রোডমার্চ হবে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে বেলা সোয়া একটার দিকে বিক্ষোভ নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পুরানা পল্টন মোড় হয়ে বিক্ষোভটি সচিবালয়সংলগ্ন আবদুল গণি রোডের জিরো পয়েন্ট মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। সেখানে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ।
বিক্ষোভকারীরা কাঁটাতারের ব্যারিকেড সরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা ব্যারিকেড ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন। পুলিশও বিক্ষোভকারীদের ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয়। কাঁটাতারের আঘাতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজনের হাত কেটে যায়।
পুলিশের ব্যারিকেড সরাতে না পেরে একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা জিরো পয়েন্ট মোড় থেকে চলে যান। চলে যাওয়ার আগে বিক্ষোভকারীদের পক্ষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ যেভাবে বাধা দিয়েছে, আমরা তার নিন্দা জানাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আমরা বলতে চাই, আপনারা আপনাদের পেশাদারি দায়িত্ব পালন করুন। সরকারের সহযোগী হিসেবে দেশের মানুষ আপনাদের দেখতে চায় না।’
ঘটনাস্থলে থাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহেন শাহ মাহমুদ বলেন, সচিবালয় রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। চাইলেই কেউ এখানে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যেতে পারেন না। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুরক্ষিত করাই পুলিশের কাজ। এই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা সর্বোচ্চ ধৈর্য দেখিয়েছেন।
জিরো পয়েন্ট মোড় থেকে ফিরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে তাঁরা সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ বাধা দিয়েছে। যে ধরনের আয়োজন পুলিশ সেখানে করে রেখেছে, যেভাবে তারা মারমুখী হয়েছে, তাতে মঞ্চের অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।