নিউমার্কেট এলাকায় পাপোশ বিক্রি করতেন মো. শাহজাহান (২৫)। মঙ্গলবার সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশে তিনি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বাসা থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মা আয়শা বেগম তাকে এই সংঘাতমুখর পরিস্থিতিতে বের হতে নিষেধ করেন। তিনি মাকে বলেছিলেন, দ্রুতই ফিরবেন। তবে তার আর বাসায় ফেরা হয়নি। রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে মা খুঁজে পান প্রাণপ্রিয় সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই যুবকের রক্তাক্ত নিথর দেহ ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন অ্যাম্বুলেন্স চালক আলী মিয়া ওরফে সোহেল। তিনি জানান, ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল থেকে ওই যুবককে তুলে দেন সেখানকার কর্মীরা। তারা রোগীকে দ্রুত ঢামেক হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
অ্যাম্বুলেন্স চালকের সহকারী শাকিল জানান, নিউমার্কেট এলাকায় তিনি সংঘর্ষে আহত হন বলে শুনেছেন।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, শাহজাহানের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে আসেন শাহজাহানের স্বজনরা। এ সময় জরুরি বিভাগের মর্গের সামনে মৃতের মা আয়শা বেগমকে কাঁদতে দেখা যায়। তিনি জানান, পরিবারের সঙ্গে কামরাঙ্গীরচরের চাঁন মসজিদ এলাকায় থাকতেন শাহজাহান। দেড় বছর আগে তিনি বিয়ে করেন। তুচ্ছ বিষয়ে মনোমালিণ্যের কারনে বাসা থেকে না খেয়েই বের হন তার ছেলে। তিনি চলমান পরিস্থিতিতে বাইরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তার কথা শোনেনি ছেলে।
তিনি বিলাপ করছিলেন, ‘পোলাডার আমার কী অপরাধ ছিল? কেন অরে মাইরা ফালাইল? এখন আমার কী হইব! ও বাবা, তুই একবার কথা ক। চুপ থাকিস না বাবা। কই গেলি রে সোনা!’
মৃতের খালু মো. মুসলিম জানান, সন্ধ্যায় পপুলার হাসপাতাল থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়, শাহজাহান অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। খবর পেয়ে তারা পপুলারে গেলে জানানো হয়, তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এরপর তারা এখানে আসেন।
তিনি জানান, শাহজাহানের বাবার নাম মোহাম্মদ মহসিন। ছেলে ছোট থাকতেই তিনি আরেক বিয়ে করে আলাদা হয়ে যান। পরে সৎবাবার সংসারে বেড়ে ওঠেন শাহজাহান। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয় ছিলেন।