সংকটে পোশাক শিল্প, কার্যাদেশ যাচ্ছে অন্য দেশে

0
22
পোশাক শিল্প
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন কারণে দেশে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। যেগুলো সচল আছে সেখানে গ্যাসসংকট, বিদ্যুৎ ঘাটতি, বিমানবন্দরের জটিলতা, আন্দোলন, কর্মবিরতির পাশাপাশি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে পোশাক খাতের অনেক ক্রয়াদেশ বাতিল হচ্ছে এবং কার্যাদেশ অন্য দেশে চলে যাচ্ছে।
 
তথ্যমতে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত এক বছরে দেশে বিভিন্ন কারণে প্রায় ২০০ পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। ফলে রপ্তানি ক্রয়াদেশ হ্রাস, কর্মসংস্থান সংকট ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কারখানা বন্ধের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
এছাড়া রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অবরোধ, লোডশেডিং এবং গ্যাসসংকটসহ বিভিন্ন কারণে সময়মতো উৎপাদন শেষ করা যাচ্ছে না। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের নির্ধারিত সময়সীমা রক্ষা করতে অনেক রপ্তানিকারককে বাধ্য হয়ে ব্যয়বহুল বিমানপথে পণ্য পাঠাতে হচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের ইমেজ সংকটে পড়ছে।
 
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সংকট অব্যাহত থাকলে পোশাক খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্তের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব পড়বে। এছাড়া দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং দক্ষ অবকাঠামো গড়ে তোলা ছাড়া পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়বে।
 
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, দেশের সার্বিক অনিশ্চয়তার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন অর্ডার দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন। যদি দ্রুত সমাধান না আসে, এই সংকট আরও গভীর হবে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, শাহজালার বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। নতুন অর্ডারের প্রবাহেও ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
 
বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট, বিমানবন্দরের জটিলতা, আমলাতান্ত্রিক বাধা সব মিলিয়ে গার্মেন্ট খাত এখন সংকট ব্যবস্থাপনার খাতে পরিণত হয়েছে।
 
বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন, পোশাক রপ্তানি ব্যবসা হুমকির মুখে। ক্রেতারা সময়মতো পণ্য পাবে কি না, সেই আস্থা পাচ্ছে না। যার কারণে তারা বাড়তি দাম দিয়েও অন্য দেশে অর্ডার সরিয়ে নিচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.