রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি মো. আজিজ মহাজনকে (৪৫) চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দিনগত রাত ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। নিহত আজিজ মহাজন নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রাম গ্রামের মৃত আজের মহাজনের ছেলে।
গড়াই নদীর জেগে ওঠা চরকে কেন্দ্রে করে আজিজকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে তার বড় ভাই মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘গড়াই নদীর খাস জমিকে কেন্দ্র করে তার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ভূমিদস্যুরা। রোববার রাত ৭টার দিকে পাশের গ্রাম মরাবিলা থেকে বাড়ি ফিরছিল আজিজ। রাস্তায় বাঁশ ফেলে তার পথরোধ করে কোনাগ্রামের ভূমিদস্যু শাহাদত হোসেনের ছেলে সাজিদ রাফি (৩০) রড দিয়ে মাথায় প্রথমে আঘাত করলে আজিজ মাটিতে পড়ে যায়। এরপর কোনাগ্রামের জাকির মন্ডলের ছেলে ইরান মন্ডল (২৬), আনোয়ার মন্ডলের ছেলে নিশাত মন্ডল (২৬) ও মৃত মালেক মহাজনের ছেলে রেজাউল মহাজনসহ (৩০) আরও সাত-আটজন চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।’
স্থানীয়রা আজিজকে উদ্ধার করে প্রথমে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফরিদপুর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন সাহা জানান, এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহমান বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলা রেকর্ডের প্রস্তুতি চলছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
গড়াই নদীর জেগে ওঠা খাস জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ভূমিহীন ও ভূমিদস্যুদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। প্রশাসন খাস জমি ভূমিহীনদের পক্ষে বন্দোবস্ত দিলেও ভূমিদস্যুদের কারণে দখলে যেতে পারছে না ভূমিহীনরা। এতে বছরে কয়েক কোটি টাকার ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বন্দোবস্ত পাওয়া ভূমিহীনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে শাহাদত হোসেনসহ তার দলের অনেককেই ভূমিদস্যু হিসেবে চিহ্নিত করে মামলা করেন। শাহাদত হোসেনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।