ভারত এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে গেছে আগেই। শেষ ম্যাচের সমীকরণ তাদের কাছে খুব একটা তাৎপর্য বহন করছে না। তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে জয়ের ধারা ধরে রাখার চেষ্টা অবশ্যই করবে তারা। কলম্বোতে ভারতীয় বোলিং কোচ পরশ মামরে ইঙ্গিত দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়াসহ দলের নিয়মিত কয়েকজন বোলারকে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে।
তাহলে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের চাওয়া কী হতে পারে? নিশ্চয়ই হার মেনে নিয়ে মাঠে নামা নয়। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ার আগে তাদেরও তো কিছু চাওয়ার আছে। আর সেটা যে জয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
গতকাল কলম্বোতে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জোর দিয়েই বলেছেন, ভারতের বিপক্ষে জয় চান তারা। এশিয়া কাপ নিয়ে এবার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে আগেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র জয় ছাড়া টুর্নামেন্ট থেকে তেমন কিছু অর্জনও করা হয়নি। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ব্যাটিং ব্যর্থতার মহড়া, কলম্বোতে শ্রীলঙ্কাকে আড়াইশ রানে বেঁধে ফেলেও জিততে না পারা হতাশার নামান্তর। তাই শেষটায় অন্তত ভালো ক্রিকেট খেলে আত্মবিশ্বাস ফেরানে গেলেও দারুণ হয়। টুর্নামেন্ট থেকে বাংলাদেশ দলের শেষ চাওয়া অন্তত তাই।
সাকিবের মতে, ‘আমরা শেষ ম্যাচ জিতে দেশে যেতে পারলে সেটা আমাদের জন্য ভালো দিক হবে। এই ম্যাচ থেকে অন্য কিছু চাই না, শুধু জিততে চাই।’ যে ম্যাচে হারানোর কিছু নেই, শুধু পাওয়ার আছে। উভয় দলের জন্যই সমীকরণ এক। এ কারণে চাপ নিয়ে খেলার কারণ দেখে না কেউই। বরং ভারত চেষ্টা করবে নিয়মিত খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রেখে রিজার্ভ বেঞ্চ পরখ করে দেখা। অবশ্য কে না জানে তাদের রিজার্ভ বেঞ্চও বেশ ভয়ংকর।
তারা নিজেদের প্রমাণ করতে এমন একটি সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আসলে ভারতের কোয়ালিটি ক্রিকেটার এত বেশি যে, দ্বিতীয় সারির দলও যে কোনো সেরা দলকে হারাতে পারে। ২০১৮ সালের নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। সাধারণ একটি দল নিয়েও টি২০ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। সেখানে এশিয়া কাপের ম্যাচকে হালকাভাবে নেওয়ার অবকাশ নেই দু’বারের বিশ্বকাপজয়ীদের। আসলে বিশ্বকাপের আগে অজেয় থাকার ব্যাপারে ভারত যতটা একাগ্র, তেমনি বাংলাদেশেরও মরণপণ চাওয়া জয় দিয়ে শেষ করা। গত পাঁচ দিন এ নিয়েই তো যত আলাপ-আলোচনা টিম হোটেলে।
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের একক মিটিংয়ে ক্রিকেটারদের পালা করে যোগ দেওয়া, পারফরম্যান্সের ব্যবচ্ছেদ, ভালো করার কৌশল বলে দেওয়া; সবই তো আত্মবিশ্বাস ফেরাতে। সবচেয়ে বড় কথা, ভারতের মতো দলকে হারাতে পারলে বাকিদের একটা বার্তা দেওয়া হবে। সাকিবরা সে কৌশল করছেন মাঠের পরিবেশ পরিস্থিতি মাথায় রেখে, ‘আসলে পিচের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। যদি ভালো উইকেট হয়, তাহলে তেমন কিছু নাও হতে পারে। আবার স্পিনিং উইকেট হলে হতেও পারে। আমাদের মুক্ত চিন্তা নিয়ে যেতে হবে। খেলা শুরুর পর আসলে ভালোভাবে বোঝা যাবে কী করতে হবে।’
শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনে পেস এবং স্পিনের সমন্বয়ে একাদশ খেলাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষেও বোলিং ভারসাম্য রেখে দল নামাতে চান সাকিব। মুশফিক না থাকায় আজ একাদশে দেখা যেতে পারে এনামুল হক বিজয়কে। এ ম্যাচের ফলাফল দিয়ে দলের শক্তিমত্তা বিচার করতে চান সাকিব। তিনি মনে করেন, বিশ্বকাপের আগে আরও যে চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে, তাতেই দল গোছাতে পারবে। বিশেষ করে ব্যাটারদের হঠাৎ করে ফর্ম হারানো হতাশার। সাকিবও সেটা মনে করেন। তবে তিনি আশাবাদী কিউইদের বিপক্ষে হোম সিরিজ দিয়ে ছন্দে ফিরবে সবাই।